পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম/ফাইল ছবি
জনশুমারির মাধ্যমে দেশের তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয় বলে উল্লেখ করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তিনি জানান, এবার শুমারিতে ভাসমান জনসংখ্যার তথ্যও থাকবে।
জনশুমারি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে মিট দ্যা প্রেসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জনশুমারিতে ৪৫টি প্রশ্ন থাকবে যা ২২-২৫ মিনিট সময় লাগবে গণনাকারীর। আর ট্যাবে (ট্যাবলেট পিসি) শুমারির তথ্য ছাড়া অন্য কোনো কাজ করা যাবে না। ফলে আমাদের এসব ট্যাবে সমস্যা হবে না।
মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে শুরু হবে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ কার্যক্রম। এ ক্ষেত্রে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মতো যেসব এলাকায় ভাসমান মানুষের বসবাস বেশি সে সব এলাকায় জোর দেওয়া হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে জনশুমারি কার্যক্রম। এছাড়া বিদেশে থাকা প্রবাসীদেরও এবার গণনার আওতায় আনা হবে।
মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের পরিচালক মো. দিলদার হোসেন ও দীপংকর রয়।
মো. দিলদার হোসেন বলেন, জনশুমারির প্রিলিমিনারি প্রতিবেদন তিন মাসের মধ্যে দেওয়া হবে। শুমারির মোট ১৩৩টি প্রতিবেদন থাকবে। যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া হবে মূল প্রতিবেদন।
তিনি বলেন, জনশুমারিতে থাকবে প্রধান ৩৫টি প্রশ্ন, পাশাপাশি আরও ১০টি তথ্য নেওয়া হবে। ফলে জনশুমারিতে মোট ৪৫টি তথ্য নেওয়া হবে।
১৫-২১ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী এই জনশুমারি হবে। শুমারি শুরুর আগে ১৪ জুন রাত ১২টাকে শুমারি রেফারেন্স পয়েন্ট বা সময় হিসেবে ধার্য করা হয়েছে বলে জানান জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের এই পরিচালক।
এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি কার্যক্রম পরিচালিত হতে যাচ্ছে। একটি ওয়েবভিত্তিক ইনটিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) প্রস্তুতসহ জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমে (জিআইএস) গণনা এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের কন্ট্রোল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে।
জনশুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে সারাদেশে প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার গণনাকারী, ৬৪ হাজার সুপারভাইজার এবং বিবিএসের সাড়ে চার হাজারের অধিক কর্মচারী সরাসরি সম্পৃক্ত থাকবেন। এছাড়া দায়িত্ব পালন করবেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রায় ৯০০ কর্মচারী জোনাল অফিসার হিসেবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ বছর পরপর ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ এবং পঞ্চম আদমশুমারি হয়।
আইন অনুযায়ী প্রতি ১০ বছর পরপর দেশের প্রতিটি মানুষকে গণনার আওতায় আনতে হয়। এ জন্য ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১’ শীর্ষক প্রকল্প ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায়। তবে করোনা মহামারির কারণে এক বছর পিছিয়ে যায় জনশুমারি।
শুরুতে এ খাতে মোট ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। পরে প্রকল্পের সংশোধনীতে ব্যয় কিছুটা কমে দাঁড়ায় এক হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা।
প্রকল্পে ট্যাব সরবরাহ করেছে বাংলাদেশি প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ৪৪৭ কোটি ৭৭ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭০ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে তিন লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব। এরই মধ্যে এগুলো সরবরাহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।