খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের (ভিসি) পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগান, যা গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা হয়নি। কুয়েট জনসংযোগ বিভাগ নিশ্চিত করেছে, উপাচার্য বাসভবনে অবস্থান না করলেও সেটি এখনও তালাবদ্ধ রয়েছে। তিনি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রয়েছেন।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনায় কুয়েট শিক্ষক সমিতি এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়Ñ ১৮ ফেব্রুয়ারি বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। তারা একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দ্বারা উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়Ñ দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে কোনো শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা শিক্ষকসমাজ মেনে নেবে না। তারা দাবি করেন, এই অস্থিরতার পেছনে স্বার্থান্বেষী মহল ও পূর্ববর্তী সরকারের দোসরদের চক্রান্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য, কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে ২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যেখানে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের অনেকের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহতদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন। দাবি মানা না হওয়ায় ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তারা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। একই দিন বিকালে তারা উপাচার্যকে মেডিক্যাল সেন্টারে অবরুদ্ধ করেন, যেখান থেকে তিনি পরের দিন বিকালে মুক্তি পান।
খানজাহান আলী থানার কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে নতুন করে কোনো গ্রেপ্তার হয়নি। শিক্ষার্থীরা এখনও উপাচার্যের কক্ষের তালা খোলেননি।
এ ছাড়া কুয়েট উপাচার্য মাছুদ ও উপ-উপাচার্য শরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’। গতকাল শনিবার পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নিন্দা প্রকাশের বিষয়টি জানানো হয়। পরিষদের সদস্যরা কুয়েটের উপাচার্যের ওপর হামলা এবং লাঞ্ছিত করার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান। আস