এখন বাংলায়ও পাওয়া যাবে জাতিসংঘের কার্যক্রম সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে এই প্রস্তাব পাস হয়েছে। শুক্রবার ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় বহুভাষা ব্যবহারের প্রস্তাবটি পাস হয়। এর ফলে জাতিসংঘের স্বীকৃতি ছয়টি ভাষার পাশাপাশি বাংলা, উর্দু ও হিন্দিতে সংস্থাটির তথ্য পাওয়া যাবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এ খবর জানিয়েছে।
এই প্রস্তাব পাস হওয়ায় জাতিসংঘের বৈশ্বিক যোগাযোগ শাখা নন-অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলা, হিন্দি ও উর্দু ব্যবহার করবে। প্রস্তাবে পর্তুগিজ, কিসওয়াহিলি ও ফার্সি ভাষাও ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের ছয়টি অফিসিয়াল ভাষা রয়েছে। এগুলো হলো, ইংরেজি, রাশিয়ান, স্প্যানিশ, চীনা, আরবি ও ফরাসি।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি জানান, জাতিসংঘের তথ্য প্রচারের মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত ছয়টি ভাষার পাশাপাশি হিন্দি, বাংলা ও উর্দুকে গ্রহণ ও প্রাতিষ্ঠানিক করা হবে।
এই রেজুলেশনটির কো-ফেসিলেটর ছিল অ্যান্ডোরা ও কলম্বিয়া।
এই রেজুলেশন পাসের গুরুত্ব তুলে ধরে ভারতীয় দূত তিরুমূর্তি বলেন, জাতিসংঘের মৌলিক মূল্যবোধ হিসেবে বহুভাষাবাদ স্বীকৃত। প্রস্তাবে এই প্রথম হিন্দি ভাষার উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলা ও উর্দুর কথাও এই প্রথম বলা হলো। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
এই প্রস্তাবে ভারতসহ ৮০টি দেশ সাড়া দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিরুমূর্তি আরও জানান, ‘১৯৪৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রথম অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, যতদিন না সারা বিশ্বের সব মানুষ জাতিসংঘের লক্ষ্য ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে পারছে, ততদিন তার উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে না।’ সেই কারণেই ভাষার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
বাংলাদেশ, ভারত, সিয়েরা লিয়নসহ কমপক্ষে ১৫টি দেশের ৩০ কোটিরও বেশি মানুষের ভাষা বাংলা। সংখ্যার দিক থেকে যা বিশ্বে ষষ্ঠ। জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার স্বীকৃতির জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। সরকারসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাকে সপ্তম দাফতরিক ভাষা করার আনুষ্ঠানিক দাবি একাধিকবার তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।