রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে চলমান অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চলাকালে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তিতাস গ্যাস কোম্পানির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্য জানতে চাওয়ায় এক সাংবাদিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ জরিমানার আদেশ দেন ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ। ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক ঢাকা প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার ও ক্র্যাবের সাবেক অর্থ সম্পাদক এসএম দেলোয়ার হোসেন।
সাংবাদিক এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া বিল আদায়ে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়েই গত ১০ মে থেকে হঠাৎ করেই গোটা কামরাঙ্গীরচরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বৈধ গ্রাহকসহ সাধারণ জনমনে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় তিনজন জনপ্রতিনিধি তিতাস গ্যাস কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি বলেন, পরে গত ১৯ মে কামরাঙ্গীরচরের রসুলপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি-গ্রাহকদের সঙ্গে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধিকাংশ গ্রাহকই তাদের ভবনের বর্ধিত গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৩ মে থেকে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া বিল আদায়ে কামরাঙ্গীরচরে অভিযান শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে অভিযানে আসে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরও বলেন, বাড়িতে বর্ধিত সংযোগ না থাকার পরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তিতাস কর্তৃপক্ষ তার বৈধ চুলার সংযোগকৃত রাইজারটি খুলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে একজন গণমাধ্যমকর্মী ও গ্রাহক হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে রাইজার খুলে নেওয়ার কারণ ও দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নাম জানাসহ ঘটনার তথ্য জানতে চাইলে ছোট ভাইসহ আমাকে ধরে নিয়ে যায়। আশপাশের ভবনগুলোতে কেন অভিযান চালাচ্ছেন না? এর কারণ জানতে চাইলে আরও রেগে যান ওই ম্যাজিস্ট্রেট।
তিনি বলেন, এরপর পুলিশি প্রহরায় খলিফাঘাট এলাকায় একটি গাড়িতে বসিয়ে আটকে রাখে। কিছুক্ষণ পর ওই ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে ডেকে নিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় ও মুচলেকা রেখে দেন। এ নিয়ে আকুতি জানালেও কর্ণপাত করেননি তিনি। পরে ঋণ করে সেই টাকা জমা দেওয়ার পর আমাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু রাইজারটি নিয়ে যান। প্রতিটি বাড়িতে কেন অভিযান চালান না? এমন প্রশ্নে রেগে গিয়ে ওই ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘আপনাকে বলে তো আমি অভিযান চালাবো না।
এ বিষয়ে জানতে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর নম্বরে ফোন দেওয়া হলে তিনি কল কেটে দেন।