যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ায় একইসঙ্গে দাবানলে পুড়ছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় যখন দাবানলের তাণ্ডব থেকে বাঁচতে শত শত মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তখন একই ধরনের আগুনে পুড়ছে রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলীয় সাখা প্রজাতন্ত্র বা ইয়াকুটিয়া।
বিবিসির খবরে জানা যায়, ক্যালিফোর্নিয়ায় এরই মধ্যে দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে অন্তত ২০টি বাড়ি। গত বুধবার (১১ মে) অরেঞ্জ কাউন্টিতে শুরু হওয়া এ দাবানল এরই মধ্যে ১৯৯ একর জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় দাবানল চলছে নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যে। সেখানে অন্তত ১৭০টি বাড়ি পুড়ে গেছে, হুমকিতে পড়েছে আরও অনেক বাড়িঘর-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, উপকূলীয় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে যে বাতাসে আগুন তীব্র হয়েছিল, সেটি পরে থেমে যাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়। ওইদিন সকাল পর্যন্ত লেগুনা বিচ এলাকার প্রায় ৯০০ বাড়িতে মানুষজনের বসবাস নিষেধ ছিল।
অরেঞ্জ কাউন্টি শেরিফ ডিপার্টমেন্টের ক্যাপ্টেন ভার্জিল আসুনসিয়ন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পরিস্থিতি নিরাপদ হলে আমরা মানুষদের ফিরতে বলবো।
যুক্তরাষ্ট্রের এ দাবানল নিয়ন্ত্রণে পাঁচ শতাধিক দমকলকর্মী কাজে নেমেছেন। এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় এক দমকলকর্মী আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দাবানলে জ্বলছে রাশিয়াও। দেশটির দক্ষিণপশ্চিমে শীতপ্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে দাবানল তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে ডয়েচে ভেলে। সেখানে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, মারা গেছেন অন্তত ১০ জন।
সাইবেরিয়ান টাইমস নামে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে অঞ্চলটিতে ছড়িয়ে পড়া দাবানলের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে আসছে।
পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে গত মঙ্গলবার স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এখন পর্যন্ত সেটি সম্ভব হয়নি।
সাইবেরিয়ান টাইমস শুক্রবারও দাবানল অব্যাহত থাকার খবর জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, বিশ্ব ঐতিহ্য লেনা পিলারসে দাবানলের হানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একটি পর্যটকবাহী নৌকা থেকে দাবানলের ভয়াবহ দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।
রাশিয়ার শীতলতম স্থান সাখা প্রজাতন্ত্রে দাবানল পরিস্থিতি রীতিমতো ভয়াবহ। বিচ্ছিন্নভাবে অঞ্চলটির অন্তত ৩০০ জায়গায় আগুন জ্বলছে। তবে এর মাত্র অর্ধেক জায়গার আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে, কারণ সেগুলোকে জনজীবনের জন্য বেশি হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে। বাকিগুলো প্রকৃতির ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
Q