আন্তঃনগর ট্রেনে শোভন শ্রেণিতে আবারও স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বৃহস্পতিবার (১২ মে) রেল ভবনে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, করোনার কারণে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি বন্ধ ছিল। তখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন করতো ট্রেন। এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাই আবার আন্তঃনগর ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম পথে আন্তঃনগর ট্রেন বেশি যাতায়াত করে। তবে শোভন শ্রেণিতে কত শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। শিগগির টিকিট বিক্রির তারিখ জানানো হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল জোনের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এখন অনেকেই বিনা টিকিটে যাতায়াত করেন। পর্যাপ্ত টিটিই না থাকায় সব যাত্রীকে যাচাই করাও সম্ভব হয় না। আবার যাত্রীদের জরিমানা করলে অনেকেই মন খারাপ করেন। তাই রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ছয়টিসহ চট্টগ্রাম ও সিলেটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে যেসব আন্তঃনগর ট্রেন সরাসরি সিলেট, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী যাতায়াত করে সেগুলোতে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হবে না।
এনএপি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউএনসিডিএফ আয়োজিত বৈঠকে অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন
জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ২০২২ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য অধিকতর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। জাতিসংঘের মূলধন উন্নয়ন তহবিল (ইউএনসিডিএফ) এবং স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন সুবিধা বিমা, জলবায়ু বন্ড, শেয়ারবাজারকে শক্তিশালী করা, পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারত্বের ভিত্তিতে মিশ্র জলবায়ু অর্থায়নের মতো উদ্ভাবনী অর্থায়নের উপকরণ অন্বেষণে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউএনসিডিএফ আয়োজিত ‘লোকাল ক্লাইমেট অ্যাডাপটিভ লিভিং ফ্যাসিলিটি’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার বর্তমানে আমাদের বার্ষিক বাজেটের প্রায় ৬ থেকে ৭ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে ব্যয় করছে। এই ব্যয়ের ৭৫ শতাংশের বেশি দেশীয় উৎস থেকে অর্থায়ন করা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধির সঙ্গে অভিযোজন অর্থায়নের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, ২০৫০ সাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য আমাদের অভিযোজন খরচ অনুমান করা হয়েছে ৫৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে বার্ষিক পুনরাবৃত্তি ব্যয় হবে ১১২ মিলিয়ন ডলার। অভ্যন্তরীণ মৌসুমি ব্যয় অনুমান করা হয়েছে ২৬ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের উচ্চব্যয় কল্যাণ, আয় বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য নিরসন কর্মসূচিতে আমাদের বরাদ্দকে প্রভাবিত করবে।
শাহাব উদ্দিন বলেন, আমাদের দীর্ঘমেয়াদী বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে ২৩ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। ২০১৮ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে আমাদের প্রয়োজন চার দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। আমরা প্রতি বছর সবুজ জলবায়ু তহবিল থেকে দুই বিলিয়ন ডলার সংস্থানের পরিকল্পনা করছি। বাকি অর্থ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী, বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ এবং বেসরকারি খাতের কাছ থেকে পাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে এলডিসি মর্যাদা থেকে উত্তরণের জন্য অভ্যন্তরীণ সরকারি এবং ব্যক্তিগত উৎসগুলিতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে। আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল প্রবেশ করার জন্য আমাদের আরও সুযোগের অনুসন্ধান করতে হবে। ইউএনসিডিএফ এবং আমাদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে স্থানীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই প্রোগ্রামটি জলবায়ু অভিযোজিত কার্যক্রমের জন্য স্থানীয় সরকারকে অনুদান স্থানান্তর করতে সহায়তা করছে।
অধিবেশনে ইউএনসিডিএফ’র নির্বাহী সেক্রেটারি প্রীতি সিনহা ছাড়াও স্বল্পোন্নত দেশ, সিআইডিএস ও আফ্রিকান দেশগুলোর মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে আরও ছিলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল এবং মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব কবিরুজ্জামান চৌধুরী।