ওমান উপকূলের নিকট আরব সাগরে ইসরাইলের একটি ব্যবসায়িক জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এই তথ্য জানিয়েছে। ইসরাইলের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। ফলে ঘটনায় কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা এখনও জানা যায়নি।
ওমান উপকূলে ইসরাইলি হামলার বিষয়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ওমানের উত্তরপূর্ব দ্বীপ মাসিরাহতে এ হামলা হয়। এ বিষয়ে একটি তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে। হামলার ঘটনাস্থল ওমানের রাজধানী মাসকত থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে।ঘটনার বিষয়ে ওমান কিংবা আরব সাগরে টহলরত যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ফিফথ ফ্লিটও কোনো মন্তব্য করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, ওমান উপকূলে এমন এক সময় ইসরাইলের জাহাজে হামলা হলো যখন-ইরানের সঙ্গে দেশটির চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আগামী সপ্তাহে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব শক্তির পরমাণু চুক্তি আলোচনা স্থগিত আছে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে উত্তর ভারত মহাসাগরে ইসরাইলি মালিকানাধীন একটি কার্গো জাহাজে হামলা হয়। ওই হামলায় জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়।
এসব হামলার জন্য ইসরাইল ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানকে দায়ী করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের কর্তৃত্ব নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে ছায়াযুদ্ধ লেগেই থাকে।গত এপ্রিলে ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে একটি রহস্যজনক বিস্ফোরণ ঘটে। একে নাশকতা বলে অভিহিত করে ইরান। এ হামলার জন্য তারা ইসরাইলকে দায়ী করে।
বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়, ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার দীর্ঘদিনের অঘোষিত ছায়াযুদ্ধ এখন একটি বিপজ্জনক মোড় নিয়েছে। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। তিনি ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
কিন্তু নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রকে সেই চুক্তিতে ফেরাতে চান। অচলাবস্থা ভাঙতে গত এপ্রিল থেকে নানা চেষ্টা চলছে। তবে পারমাণবিক চুক্তিটিকে পুনর্বহালের উপযুক্ত মনে করে না ইসরাইল। তাই এ চুক্তি নিয়ে সমঝোতা নস্যাৎ করতে ইহুদিবাদী দেশটি পরিকল্পিতভাবে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে।