1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন কু‌মিল্লার বরুড়ায় গণধর্ষ‌ণের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন

ফ্রান্সের ম্যাক্রোঁর ইসলাম বিরোধী বক্তব্যে বিভিন্ন দে‌শের প্রতিবাদ

আন্তর্জা‌তিক সংবাদ:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০
  • ২০১ বার পঠিত

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসলাম এবং মুসলিমবিরোধী বক্তব্যে বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা বাড়ছে। ম্যাক্রোঁর মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় খেপেছেন তার বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রনেতারা। এদিকে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

দু’দিন আগে রোববার ম্যাক্রোঁকে নিয়ে সবচেয়ে তীর্যক মন্তব্য করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। ফরাসি প্রেসিডেন্টকে মানসিক রোগী বলে আখ্যা দেন তিনি। প্রতিবাদে আঙ্কারা থেকে রাষ্ট্রদূতকে ফ্রান্সে ডেকে নেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সম্প্রতি ফরাসি কুখ্যাত ম্যাগাজিন শার্লি হেব্দোতে মহানবী (স.) কে নিয়ে প্রকাশিত ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ক্লাসরুমে প্রদর্শন করেন ফরাসি এক শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ন্যাক্কারজনক এ কর্ম ঘটান তিনি। মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা, মহানবী (স.) কে নিয়ে অসম্মান ধর্ম অবমাননার সামিল। পরে ওই শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এ ঘটনার পরই ফ্রান্স সরকার নতুন করে ইসলাম এবং মুসলমানবিরোধী প্রচারণা শুরু করে।
ধারাবাহিকতায় ফ্রান্সের সরকারি ভবনে মহানবী (স.) এর ব্যঙ্গাত্মক কাটুন প্রদর্শন শুরু হয়। চলতি মাসের শুরুতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসলামের কারণে বিশ্ব এখন সংকটে রয়েছে। প্রতিশ্রুতি দেন ডিসেম্বরে ইসলামি উগ্রবাদ মোকাবিলায় শক্তিশালী বিল উত্থাপনের।
এসময় মুসলমানদের বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দেন ম্যাক্রোঁ। ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ কঠোর হস্তে দমনেরও ঘোষণা দেন তিনি। কার্টুন প্রকাশে বন্ধের আহ্বানের বিষয়ে তিনি বলেন, কার্টুন প্রকাশনা তিনি বন্ধ করতে পারবেন না। কার্টুন প্রকাশ বন্ধ করাকে স্বাধীন মত প্রকাশের ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্বাধীন মত প্রকাশ কখনোই কাউকে অসম্মান এবং আঘাত করাকে সমর্থন করে না। তা সত্ত্বেও ইসলাম এবং মুসলানদের লক্ষ্যবস্তু বানানোর জন্য স্বাধীন মত প্রকাশকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
ম্যাক্রোঁর এমন বক্তব্যে পশ্চিম থেকে পূর্ব সারাবিশ্বের মুসলমানরা তীব্র নিন্দা এবং ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দেন। তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, ফিলিস্তিন, মিশর, আলজেরিয়া, জর্ডান, সৌদি আরব এবং তুরস্কের কর্তৃপক্ষ।
সামাজিক মাধ্যমে ‘হ্যাশট্যাগ বয়কট ফ্রান্স প্রোডাক্ট’ লিখে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন মুসলিম দেশের নাগরিকরা। সামাজিক মাধ্যমে ফ্রান্সবিরোধী প্রচারণার কারণে আরব দেশের বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ফরাসি পণ্য বয়কটের ঘোষণা দেয়।
সাধারণ মানুষের রাস্তায় নেমে, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বিষোদগারের বিষয়টি নজরে আসে মুসলিম বিশ্বের নেতাদেরও।
ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে সোমবার পাকিস্তানে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পাকপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ঘৃণাবীজের যে চাষাবাদ শুরু হয়েছে এতে সমাজে বিভক্তি শুরু হবে। যার ফল হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।
আগের দিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফেসবুককে একটি চিঠি লেখেন। সেখানে ইসলামবিরোধী কনটেন্ট নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি হলোকাস্ট অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নেয়রা জন্য বলেন তিনি।
ইসলামের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য এবং ঘৃণা বক্তব্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জাতিসংঘের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
রোববার যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। প্রতিবাদ, বিক্ষোভে ম্যাক্রোঁর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এ তথ্য জানিয়েছে।
বিক্ষোভ হয়েছে আরেক যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ লিবিয়ায় রাজধানী ত্রিপোলিতে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এসময় ফ্রান্সের পতাকা পোড়ানোর পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ছবিতে জুতা মারেন বিক্ষোভকারীরা।
‘মুসলমান হিসেবে প্রত্যেক নবীকে সম্মান করা আমাদের দায়িত্ব। অন্য কোনো নবীর ক্ষেত্রে হলেও আমরা তাই করবো। ৫৬ বছর বয়সী গৃহিনী ফাতিমা মাহমুদ আরো বলেন, ইসলাম এবং মুসলামনকে হুমকি দিয়ে ফ্রান্সে সামাজিক শান্তি অসম্ভব।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দেইর আল বালাহ শহরে বিক্ষোভে ম্যাক্রোঁর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। ম্যাক্রোঁর বক্তব্যকে ইসলাম, মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণ এবং অসম্মান বলে আখ্যা দেন তারা।
গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের নেতা মাহের আল হুলি বলেন, ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের নিন্দা জানাই আমরা। শব্দ, কর্ম, বাজে অঙ্গভঙ্গি বা ব্যঙ্গাত্মক কাটুনের মাধ্যমে যারাই মহানবী (স.) কে অসম্মানের চেষ্টা করবে তাদেরও নিন্দা জানাবো আমরা।
ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে মহানবী (স.) কে অসম্মান করেছে জানিয়ে তার নিন্দা জ্ঞাপন করেছে লেবানন সরকারের জোটসঙ্গী হিজবুল্লাহ। 
ইরাকে ইরানপন্থী সংগঠন ‘রাবা আল্লাহ’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ম্যাক্রোঁ দেড়’শ কোটি মানুষকে অসম্মান করেছে। সতর্ক করে দিচ্ছি, যে কোনো জায়গায়, যে কোনো সময় আমরা জবাব নিতে প্রস্তুত।
মহানবী (স.) এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রদর্শন অব্যাহত রাখার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মরক্কোরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এমএপি এ তথ্য জানিয়েছে।
জর্ডানের ধর্মমন্ত্রী মোহাম্মেদ আল খালাইয়েহ বলেন, মহানবীকে অসম্মান, মত প্রকাশের কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়। এটা অপরাধ যা সংঘাতে উস্কানি দেয়।
ফ্রান্সের বামপন্থী লা ফ্রান্স ইসসৌমিজ দলের প্রধান এবং দেশটির পার্লামেন্ট সদস্য জো লুক মেলানচোনও ম্যাক্রোঁকে আক্রমণ করেছেন।
বলেন, ম্যাক্রোঁ পুরো পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। এরদোয়ানের বক্তব্যে, ফ্রান্সকে অবজ্ঞা, অপমান এবং উপহাস করা হয়েছে। ম্যাক্রোঁর কৌশল কী? তিনি টুইটের পাশাপাশি কী করার পরিকল্পনা করছেন? ”
ইউরোপের কয়েকটি বন্ধুর সমর্থন পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোররেল বলেন, এরদোয়ানের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। সংঘাত উস্কে দেয়ার মতো ভয়াবহতা পরিহারে তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ম্যাক্রোঁকে সমর্থন জানিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্গারাইটিস শিনাস বলেন, এটাই ইউরোপের মূল্যবোধ। ইউরোপীয়দের জীবনধারা। মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের হতাশ করায় দুঃখিত। এসময় ইউরোপীয় মূল্যবোধের একটি আর্টিকেল তার টুইটের পোস্টে জুড়ে দেন।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট দফতরের যোগাযোগ বিষয়ক প্রধান ফাহরেত্তিন আলতুন তার বক্তব্যের সমালোচনা করেন। ইউরোপীয় বর্ডার গার্ড এবং কোস্টগার্ড এজেন্সির (ফ্রন্টেক্স) একটি লিংক জুড়ে দিয়ে তিনি টুইটারে বলেন, বাস্তবে এটাই আপনাদের জীবন ব্যবস্থা; সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং শরণার্থীদের অবৈধভাবে বের করে দেয়া।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস ফরাসি প্রেসিডেন্টের পক্ষ নিয়ে রোববার বলেন, ফ্রান্সকে লক্ষ্য করে তুর্কি নেতাদের ঘৃণ্যবক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। ধর্মীয় ঘৃণায় জ্বালানি জোগাবে এসব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com