অটোচালক থেকে মেয়র। এটি কোনো সিনেমার গল্প নয়। বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের তামিলনাড়ুতে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এমন অবাক করা তথ্য জানা গেছে।
কে সরাভনান (৪২) তামিলনাড়ুর থুক্কামপালায়মে দুই দশক ধরে অটোরিকশা চালান। সম্প্রতি তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুর জেলার কুম্বাকোনাম করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
তবে মেয়র হওয়ার পরও তিনি নিজেকে আগের মতোই সাধারণের কাতারেই রাখতে চান। সেজন্য গত শুক্রবার (১৮ মার্চ) তিনি তার অটোরিকশা চালিয়েই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ডিএমকে রাজ্যের ২১টি করপোরেশনের মধ্যে ২০টিতে তাদের দল থেকে প্রার্থী মনোনীত করেন। এর মধ্যে কংগ্রেসের জন্য একটি মেয়র পদ খালি রাখে দলটি। পদটির জন্য কংগ্রেসের সিনিয়র কোনো নেতার মনোনয়ন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দলটির উচ্চপর্যায় থেকে পদটির জন্য সরাভনানকে মনোনীত করা হয়।
মন্দির শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত ভোটে সরাভনান মোট দুই হাজার ১০০ ভোটের মধ্যে ৯৬৪টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তিনিই কুম্বাকোনামের প্রথম মেয়র যা সম্প্রতি একটি করপোরেশনরে মর্যাদা পেয়েছে।
কংগ্রেসের অনেক বিশিষ্ট নেতা সরাভনানকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন। সেখানে তারা এমন মধ্যম অবস্থান থেকে প্রার্থী বাছাই করায় দলীয় নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে আলাপকালে সরাভনান জানান, দল থেকে তাকে শীর্ষ পদে মনোনীত করার খবরে তিনি হতবাক হয়ে যান।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সরাভনান বলেন, তিনি একজন অটোচালক ও তার মেয়র হওয়ার যোগ্যতা নেই। কিন্তু অনুষ্ঠানের নেতারা তাকে সম্ভাব্য সব সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দেন। তারা সরাভনানকে জানান যে, তার এই জয়ে রাহুল গান্ধীও খুশি হয়েছেন। এ সময় সরাভনান রাজ্যের সব পুরসভার মধ্যে কুম্বাকোনামকে সেরা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সরাভনান দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। অল্প বয়সেই তিনি বাবা-মা দুজনকেই হারিয়ে দাদা-দাদির কাছে বড় হন। তার দাদা টি কুমারাসামি ১৯৭৬ সালে কুম্বাকোনাম পুরসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দাদার মাধ্যমে অনুপ্রাণীত হয়ে সরাভনান ২০০২ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন ও শিগগির ওয়ার্ড নেতা ও পরে দলের কুম্বাকোনাম ইউনিটের সহ-সভাপতি মনোনীত হন।
সরাভনান তার স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ থুক্কামপালায়মে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। মেয়র হিসেবে তার পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে তিনি ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজের কাজ সম্পন্ন করা, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করাসহ মৌলিক সুবিধাগুলো নিশ্চিত করার দিকে মনোনিবেশ করছেন।