নিসঙ্গতা ও একাকিত্ব একটি মানুষকে সব সময় হতাশা ও সিদ্বান্তহীনতায় ব্যস্ত রাখে। একাকিত্ব ও নিসঙ্গতা এতটাই যন্ত্রণাদায়ক এ অবস্থায় যিনি থাকেন তিনি একমাত্র উপলব্ধি করতে পারেন। সৃষ্টির সেরা জীব হল মানুষ, আর এ মানুষটি যখন একাকিত্ব ও নিসঙ্গতায় থাকে তার পরিণতি কখনও ভাল হয় না। সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনা দেখে আমরা শিক্ষা নিতে পারি।
প্রথম ঘটনা: কুমিল্লার একজন শ্রদ্ধেয় আইনজীবী তার নিসঙ্গতা আর একাকীত্বতা দূর করতে ৯০ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন বলে আপনারা এই বিয়ে নিয়ে প্রচন্ড ট্রল করেছিলাম। এ বিয়ে তার ছেলে মেয়ে ও পরিবারের সমর্থনে হয়েছে। শুধুমাত্র একাকিত্ব ও নিসঙ্গতায় না থাকতেই এ বিয়ে করেন ৯০ বছরের আইনজীবী।
ঠিক একই বয়সের একজন মানুষ আজ নিসঙ্গতা আর একাকীত্বের যন্ত্রনা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে সেই আপনারাই আবার খুব স্যাড হয়ে যাচ্ছেন। না না ভাবে সবাই যার যার অনুভতি প্রকাশ করেছেন।
সমাজের বিত্তবান ও শিক্ষিত পরিবারের একজন বাবা অভিমান ও হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন; আরও কত পিতার আহত আত্মা হয়তো মৃত্যুর জন্য ছটফট করছে।
মুসলিম পরিবারে ইসলামচর্চা না থাকা এ ধরণের ঘটনার প্রধান কারণ। পরিবার ও সন্তান শুধু নামের মুসলিম না হয়ে সত্যিকারের একজন মুসলিম হত তাহলে সে পরিবারে এ ধরণের মর্মান্তিক ঘটনা কখনও আমাদের দেখতে হত না অনেকটাই নিশ্চিত করে বলা যায়।
যে স্ত্রী-সন্তান আল্লাহর পবিত্র কোরআন ও তার রাসূলের দেখানো পথের সন্ধান পেয়েছেন তারা পৃথিবীর কোনো কিছুর লোভেই স্বামী কিংবা মা বাবাকে একাকী ফেলে দিয়ে বিদেশে থাকার স্বপ্ন কেউ দেখতো না ।
এর আগে (পরিবার ও সন্তান বিদেশে থাকায়) নিঃসঙ্গতা ও একাকিত্ব থাকায় ফ্ল্যাটের টয়লেটের সামনে ড. তারেক শামসুর রহমানের পড়ে থাকা লাশের ছবি আমাদের ব্যথিত করেছিল। গতকাল বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, নতুন বছরের প্রথম মাসে ভার্সিটি পড়ুয়া শতাধিক উচ্চশিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
ভোগবাদের চোখ ধাঁধাঁনো কালচার আপনাকে রিয়েল সুখী করবে না কখনো, সুখের অভিনয়কারী বানাবে বড়জোর।
সুতরাং সময় থাকতে ফিরে আসুন, কুরআনের ছায়ায়, ইসলামের আলোয়। পরিবারকে আর যা শেখান বা না শেখান, ইসলামকে ভালো করে শেখান। ইসলাম একমাত্র শান্তির ধর্ম। ইসলামের ধর্মীয় জ্ঞান থাকলে কখনও কোন পিতা মাতাকে এভাবে একাকিত্ব ও নিসঙ্গতায় থাকতে হত না। একাকিত্বতা ও নিসঙ্গতার অভিশাপ থেকে সবাই বেরিয়ে আসুক।