বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এ পদে আর কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল না করায় তিনিই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অন্য পদগুলোর ফলাফল ঘোষণা হয়নি। তবে খবর পাওয়া গেছে, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং সহ-সভাপতি পদে বসছেন বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত বক্সী।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন ঘিরে বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই উৎসবের আমেজে ছিলেন ঘাসফুলের কর্মী-সমর্থকরা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে অনুষ্ঠিত হয়েছে নির্বাচন। নির্বাচন শেষে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সর্বভারতীয় চেয়ারপারসন হিসেবে মমতার নাম ঘোষণা করেন।
তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনিই দলীয় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এবারেও তার অন্যথা হবে না, তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। এ জয় থেকে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট: তৃণমূল শিবির মমতার নেতৃত্বেই এগোতে উন্মুখ। দলীয় চেয়ারপারসন হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, তৃণমূল এখন সর্বভারতীয় দল। ২০১৬ সালে কমিশনের স্বীকৃতি পেয়েছি। মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল সাংগঠনিক নির্বাচন করার জন্য। ফেব্রুয়ারিতেই তা করে দিলাম। তিনি জানান, দলটির প্রথম ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হবে দিল্লিতে। সেখানেই নতুন পলিসি সম্পর্কে জানানো হবে।
তৃণমূল যে আর আঞ্চলিক দল নয়, তা অনেক আগেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। জাতীয় রাজনীতিতে তারা এখন বিজেপি-বিরোধীদের অন্যতম প্রধান মুখ হয়ে উঠেছে। নানা ইস্যুতে মোদী সরকারকে কোণঠাসা করার ক্ষেত্রে রীতিমতো সফল মমতার দল। গোয়ার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এবার পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশ থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আগামী লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশেও লড়বে দলটি।
মমতা জানান, উত্তরপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অখিলেশ যাদব ও সমাজবাদী পার্টির হাত শক্ত করতে তিনি সেখানে যাবেন। সামিল হবেন প্রচারণাতেও।
নির্বাচন শেষে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই সভা থেকে ভারতীয় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গেলো তাকে। বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি-বিরোধী জোটে কংগ্রেসকে সামিল করতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কংগ্রেসই সাড়া দেয়নি।
মমতার মতে, কংগ্রেস যদি মনে করে এতে ঘাসফুল শিবির দুর্বল হয়ে পড়বে, তাহলে সেটি তাদের ভুল ধারণা। কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে তৃণমূল বদ্ধপরিকর। পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটাতে পারলে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকেও হটাতে সফল হবে তৃণমূল।