সদ্য সমাপ্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের ৭৪-তম অধিবেশনে বাংলাদেশের মতো উৎপাদনে সক্ষম উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোভিড ভ্যাকসিন ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি করে তা দ্রুত অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে বিনামূল্যে সরবরাহের জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ।
একই সঙ্গে কোভিড নির্মূলে টিকা, ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির বাধ্যবাধকতাসমূহ সাময়িকভাবে প্রত্যাহারেরও আহবান জানায় ঢাকা। পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কোভিড-১৯ ও এর আর্থ-সামাজিক প্রভাব মোকাবেলায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও ভ্যাকসিন প্রদান সংক্রান্ত কার্যক্রম এবং প্রণোদনা প্যাকেজসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিভিন্ন কার্যকর উদ্যোগসমূহ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করে।
জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানিয়েছে, গত ২৪ মে থেকে ১ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ৭৪তম স্বাস্থ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। করোনা মহামারীর কারণে এবারের সম্মেলনটি ভার্চুয়ালি হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মাাালি কল-এর নেতৃত্বে ও জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এই ভার্চুয়াল অধিবেশনে যোগ দেয়। এবারের সম্মেলনে কোভিড-১৯ সঙ্কট মোকাবেলায় ভ্যাকসিন উৎপাদন, সরবরাহ ও সুষম বণ্টনের বিষয়টি বিশেষভাবে প্রাধান্য পায়।
সম্মেলনে বাংলাদেশ ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স’র কো-চেয়ার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স মোকাবেলায় বৈশ্বিক সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে। এছাড়া, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও একটি শক্তিশালী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গড়ে তোলার জন্য টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিতকরণের উপর জোর দেয়।
সম্মেলনে জেনেভাস্থ জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ১১টি দেশের পক্ষ থেকে মানসিক স্বাস্থ্য ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স-এর উপর দুটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের ৭৪-তম অধিবেশনের পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী পরিষদ এবং প্রোগ্রাম, বাজেট ও প্রশাসন কমিটির দুটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ উভয় কমিটির নির্বাচিত সদস্য হিসেবে এসকল সভায় অংশগ্রহণ করে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক নির্বাহী পরিষদের সভার পোর্টিয়ার এবং রাষ্ট্রদূত রহমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের ‘কমিটি-বি’-এর ভাইস-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এবারের সম্মেলনে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর মোট ৩৫টি প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জানানো হয়েছে।