কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকেরা প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবেন বলে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। আল-হাইআতুলের অধীনে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের সব কওমি মাদ্রাসায় ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী বোর্ড। রোববার কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের স্থায়ী কমিটির একটি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ রোববার যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসায় আল-হাইআতুলের স্থায়ী কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা থেকে এ সিদ্ধান্ত আসে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আল–হাইআতুলের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়। এই প্রতিনিধিদলে থাকবেন মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।
আল–হাইআতুল উলয়ার সদস্য মুফতি ফয়জুল্লাহ নাগরিক খবরকে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি নিজে ওই বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন।
সভা থেকে কওমি মাদ্রাসার যেসব নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের ‘রমজানের এই রহমতের মাস বিবেচনায়’ সরকারের কাছে তাঁদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়।
নিরীহ’ আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হয়রানি না করার জন্য ‘বিশেষভাবে’ অনুরোধও জানানো হয়। স্থায়ী কমিটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোজার মধ্যেই হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেওয়া ও রমজানের পর কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি বিশেষভাবে আবেদন জানিয়েছে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত সব সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল-হাইআতুল উলয়া। এর অধীন এক বা একাধিক বোর্ড কিংবা কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া আলাদাভাবে কওমি মাদ্রাসাবিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে না। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকেরা প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে। আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য এবং কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত সব ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন পাঁচ বোর্ডের পাঁচজন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে পাঁচজন এবং চেয়ারম্যানের মনোনীত পাঁচজনের সমন্বয়ে ১৫ জনের একটি বাস্তবায়ন উপকমিটি গঠিত হবে।
সভায় বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলাসা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আবদুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি সই করেছেন আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান।