পবিত্র রমজান মাসে আলেম-ওলামা এবং তৌহিদী জনতার উপর জুলুম নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।
বাবুনগরী বলেন, সারা বছরের মধ্যে পবিত্র মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য আমল করার সেরা সময়। আল্লাহর কাছে আনুগত্য ও গোলামী প্রকাশ করা এবং নেকি বৃদ্ধির জন্য গুনাহগার বান্দার আপন সত্ত্বা ও অহং বিলীন করার মাস এই মাহে রমজান। মাহে রমজান হল সাহায্য সহানুভূতির মাস। বাকী এগারো মাসের তুলনায় রমজান মাসে সকল ধরনের ইবাদত-বন্দেগীর ফযীলত অনেক গুণ বেশি। অথচ এই মাসেই বাংলাদেশে জুলুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন চালানো হচ্ছে শত শত হেফাজত নেতাকর্মী, আলেম ওলামা, ছাত্র ও তৌহিদী জনতার উপর।
তিনি বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন করোনা পরিস্থিতির কারণে নিজ গৃহে বন্দি জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন, তখন জুলুম চলছে মসজিদ, মাদরাসা, হিফজখানা ও এসব প্রতিষ্ঠানের হেফাজতকারীদের উপর। রমজানের এই পবিত্র মাসে ফিতনা-ফাসাদ এবং প্রতিহিংসা পরিহার করার শিক্ষা যখন ইসলাম আমাদেরকে দেয়, তখন সরকার ইসলাম প্রচারকদের বন্দি করে রিমান্ডে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করছে।আমার এই সকল সহকর্মী হাজতের নোংরা পরিবেশে স্বাচ্ছন্দে গোসল করতে, অজু করতে, নামাজ আদায় করতে, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করতে, সেহরী খেতে ও ইফতার করতে পারছেন না। এসব জুলুম, বর্বরতা, মানবতার অপমান দেখে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নাখোশ হবেন।
গণপ্রতিরোধ ও প্রতিবাদ ছাড়া সহজে আলেম ওলামাদের গ্রেপ্তারের জন্য লকডাউন আরো এক সাপ্তাহ বাড়িয়ে সরকার সমগ্র দেশবাসীকে কষ্ট দিচ্ছে মন্তব্য করে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের নি¤œআয়ের গরীব মানুষকে আর হয়রানী ও কষ্ট না দিয়ে আমার কাছে তালিকাটা পাঠান, আমি অভিযুক্তদের সকলকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে জেলে চলে যাবো। একজন পুলিশও পাঠাতে হবে না। এর বিনিময়ে আপনারা লকডাউন তুলে নিন। লকডাউনের অজুহাতে জোর, জবরদস্তি করে যে সকল মাদরাসা ও হেফজখানা বন্ধ করে কুরআন-হাদীসের চর্চা বন্ধ করে দিয়েছেন, ওগুলো খুলে দিন। যাতে কুরআন-হাদীসের ব্যাপক চর্চার বরকতে দেশের উপর আল্লাহর রহমত নাযিল হয়।
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামীর আন্দোলন সব সময়ই শান্তিপূর্ণ ছিল এবং ভবিষতেও তাই থাকবে। বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করা দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকার। কোন সরকারই জনগণের এই মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। কথিত ‘তাণ্ডব ও ভাঙচুর’-এর অভিযোগে সারাদেশে গত আট বছরে যত মামলা হয়েছে, তার সবই অবৈধ, ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা। বিনা শর্তে ষড়যন্ত্রমূলক এই সকল মিথ্যা মামলা বাতিল করুন, কারাবন্দী সকল আলেম ওলামাদেরকে মুক্তি দিন।
সরকারের নীতি নির্ধারকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়ে হেফাজত আমীর বলেন, এই রমজান মাসে রিমান্ডে-েনেয়া আলেম ওলামাদেরকে বিধর্মী এবং অবিশ্বাসীদের দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করাবেন না। তারা এই সকল হেফাজত নেতাকর্মীদের সঙ্গে খুবই নিষ্ঠুর ও অপমানজনক আচরণ করছে। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এসব বরদাস্ত করবেন না।সুত্র:মানবজমিন।