1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লার বরুড়ায় গণধর্ষ‌ণের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন ‌দেশ বি‌দে‌শের সকল খবর জান‌তে নাগ‌রিক খব‌রের পা‌শে থাকুন মান‌বিক সাহা‌য্যের আ‌বেদন : চি‌কিৎসার অভা‌বে বিছানায় প‌ড়ে আ‌ছে মামুন

পর‌কীয়া সামা‌জিক ব‌্যা‌ধি: বিয়ের ১৩ বছর পর জানতে পারলাম আমার স্বামী পরনারীতে আসক্ত

নাগ‌রিক অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩১২ বার পঠিত

বিয়ের ১৩ বছর পর জানতে পারলাম, আমার স্বামী পরনারীতে আসক্ত।

সে রাতটা ছিল ঈদের রাত। সে বাইরে থেকে এসে ফ্রেশ হবার জন্য ওয়াশরুমে ছিল, আর আমি খাবার গরম করে টেবিলে সাজিয়ে, তাকে সালাম করার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কারন প্রতি ঈদে তার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করি, সেই ১৩ টা বছর ধরে। রাত আনুমানিক ১২.৩০, আমি বসে আছি, এসময় হঠাৎ তার ফোনে রিং বেজে উঠল, দেখলাম, আননোন নাম্বার, পিক করলাম না আননোন নাম্বার দেখে। রেখে দিতে যাবো, এমন সময়ে মেসেঞ্জারে টুং করে শব্দ হলো।

সচরাচর আমি তার মেসেঞ্জার চেক করি না, কিন্তু সেইসময় ফোনটা যেহেতু হাতেই ধরা ছিল, মেসেজটা দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না।
যা দেখলাম, তাতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। আমার স্বামী ১২ বছর ধরে একটা মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িত।
সেখানে সব লেখা আছে, তারা কবে কোথায় দেখা করেছে, তার দেয়া গেন্জি পরে, আজ তার সাথে দেখা করে এসছে।
সব, সবটাই লেখা আছে।

আরেকটা কথা বলা হয়নি, আমরা ৪ বছর প্রেম করে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে করি, আমাদের সংসারে দুটো সন্তান রয়েছে।

আমি ও আমার স্বামী দুজনেই শিক্ষিত, আমি চাকুরীজীবি, আমার স্বামী তেমন কিছু করে না, ফ্যামিলি বিজনেস দেখাশোনা করে, তার বাবার অঢেল সম্পত্তি ছিল, সে নেশাগ্রস্ত, নেশা করতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করে।

যাই হোক সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তার সবটাই মেনে নিয়েছিলাম, তাছাড়া প্রচন্ড ভালবাসতাম তাকে, ভাবতাম, একসময় সে নেশার জগত থেকে ফিরে আসবেই।

কিন্তু, এখন দেখছি, একটা মেয়ের সাথেও জড়িত, মেয়েটি একজন মাদক ব্যবসায়ী, সেই সাথে একটা প্রাইভেট ক্লিনিকের আয়া। অনেকে অনেক সময় এসে বলতো আমাকে এই মেয়ের কথা, কিন্তু স্বামীর প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর ভালবাসা ছিল বলে, কোনদিন বিশ্বাস করিনি।

যায় হোক, বাস্তব নির্মম সত্যিটা আজ আমার সামনে, যেটা ভয় পেতাম সেটাই হলো!!

তারপর আমি কি করলাম? আমি……..

তারপর আমি কি করলাম? আমি তার ফোনটা যথাস্থানে রেখে দিলাম। সে ওয়াশরুম থেকে বের হলে, তাকে খেতে দিলাম, আমি তেমন কিছু খেলাম না।তার খাওয়া শেষ হলে, তাকে রুমে ডাকলাম, বললাম, তোমাকে কিছু বলতে চাই, সত্যি সত্যি উত্তর দেবে, কোনকিছু অস্বীকার করবে না, কারন আমি সবকিছু জানি।

সে বলল, বলো!
আমি বললাম, কোন মেয়ের সাথে কি তোমার সম্পর্ক আছে?
আমি তখন কেবল আল্লাহ্কে ডাকছিলাম, যেন বলে সব মিথ্যা, কারন তার মুখ থেকে এটা আমি সহ্য করতে পারব না।
সে বলে, হ্যাঁ, আছে। তবে আজকের পর থেকে আর থাকবে না।
আশ্চর্য হয়ে গেলাম, কি রকম অবলীলায় সে স্বীকার করে নিল! আমার পায়ের তলার মাটি সরে গেল, কোনমতে জিজ্ঞেস করলাম, আজ থেকে ঠিক বারো বছর আগে তোমার ফোনে একটা মেয়ের ম্যাসেজ দেখেছিলাম, সেই মেয়েটাই কিনা!
সে বলল, হ্যাঁ, সে মেয়েটাই।
আমার চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেল। নিজেকে কোনমতেই সামলাতে পারলাম না।
তবুও যতোটা সম্ভব ঠান্ডা হয়ে, তার ফোনটা নিয়ে, তার সামনেই মেয়েটাকে ফোন দিলাম, তখন রাত প্রায় ২ টা বাজে।
রিং হতেই ওপাশ থেকে একটা ছেলে ফোন ধরলো, বললাম, এটা কি নাদিরার নাম্বার!
লোকটা বলল, হ্যাঁ।
বললাম, আপনি কে?
বলল, আমি তার স্বামী।
বললাম, আপনি কি জানেন, আপনার বউ একজনের সাথে প্রেম করে, নাকি নিজের বউকে বিক্রি করে দিয়েছেন?
লোকটা বলল, কি যা তা বলছেন!!
এটা বলতেই আমার হাজবেন্ড, আমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে আছাড় মেরে ভেঙে চুরমার করে ফেললো, আর আমাকে দুইটা লাত্থি মেরে বিছানা থেকে নিচে ফেলে দিল।

আমি কিছু না বলে,আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।
চলে গেলাম রান্নাঘরের দিকে, সেসময় মনে হয় কাঁদতে ভুলে গিয়েছিলাম, বুকটা পাথর, দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পড়লাম।
মনে পড়তে লাগলো সেই সব পুরনো দিনের কথা। সেসময় কলেজে পড়তাম। আমি শহরে কলেজের হোস্টেলে থাকতাম। খালাতো ভাইয়ের ফ্রেন্ড ছিল সে। সেখান থেকেই পরিচয়। চার বছর প্রেম। একটা দিনও আমাকে না দেখে থাকতে পারতো না। প্রতিদিন দেখা হতো আমাদের। কলেজ ছুটি হলে, আমি গ্রামের বাড়ি গেলে, আমাকে বাসা পর্যন্ত রেখে আসতো। মাঝে মাঝে আমাকে এক নজর দেখার জন্য আমাদের গ্রামের বাড়িতে ছুটে যেতো ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে।
একসময় দেখলাম, দুজন দুজনকে ছেড়ে থাকতে পারছি না।পারিবারিক সম্মতিতে হঠাৎ করেই বিয়ে হয়ে গেল।
দুজনের মতো সুখী কেউ ছিল না সেদিন।
এই তেরোটা বছরে, আমি একটা দিনও তাকে ছাড়া ঘুমাইনি।
আমি বাবার বাসায় যেতাম না, গেলে দুদিন থেকেই চলে আসতাম।
কারন, তার হাতটা ছিল আমার বালিশ। তার বুকে মাথা না রাখলে, কিছুতেই ঘুমটা আসতো না।
সে রাত করে বাসায় ফিরতো, আমি তার জন্য বসে থাকতাম।সে আসলে একসাথে খেতাম।

আমার দুটো বাচ্চায় সিজারিয়ান। ওটিতে ঢোকার আগ মূহুর্তে তার সে কি কান্না।
এই তেরোটা বছরে আমাকে কোনদিন অবহেলা করেনি।
আমি যা চেয়েছি, তাই এনে দিয়েছে, আমি যা করতে বলেছি, তাই করেছে।
খারাপ অভ্যাস ওই একটাই ছিল। মাদকাসক্তি। বোঝাতাম তাকে, ভেবেছিলাম, সেটাও আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

আমি সারাক্ষণ আমার বাচ্চা আর সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। সংসারের প্রতি তার কোনদিনই মনোযোগ ছিল না, বাজার করা থেকে, রান্না করা, সংসার সামলানো, বাচ্চাদের স্কুল সবটাই আমাকে একাই সামলাতে হতো। তবুও ভাল ছিলাম, সুখী ছিলাম।
বাসার প্রত্যেকটা কোনা আমার নিজ হাতে সাজানো।

আমার সেই ভালবাসার মানুষটা কি করে আমার সাথে প্রতারণা করতে পারলো, যাকে ছাড়া আমি আমার জীবনের একটা দিনও কল্পনা করতে পারি না, সে শুধুই ঠকিয়ে এসছে আমাকে।

আমি আর কিছুই ভাবতে পারলাম না। মৃত্যুর পথ বেছে নিলাম।
অন্য রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে, ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পড়লাম।

তারপর, দরজা ভেঙে আমার হাজবেন্ড আমার গলা থেকে পেঁচানো ওড়না খুলেই আমার গালে ঠাস ঠাস করে ২টা থাপ্পড় বসিয়ে দিল। আমি ২ সপ্তাহ কানে শুনতে পাইনি। সেদিন সে আমাকে স্যরি বা জড়িয়ে না ধরে থাপ্পড় কেন মারল, তা আমার আজও বোধগম্য নয়। কান্নাটা ছিটকে বের হতে চাইল কিন্তু, আঁটকে যাচ্ছিল হয়তোবা অপমান আর অভিমানের চাপে, শুধু দুচোখ দিয়ে অশ্রু আর বুক থেকে হেঁচকি উঠে আসছিল।

যায় হোক, দরজা ভাঙার শব্দে আমার শ্বাশুড়ি আর আমার পাঁচ বছরের ছোট বাচ্চাটা জেগে গেল। আমার বাচ্চাটা জেগেই কান্না শুরু করে দিলো। বাচ্চার কান্না দেখে, বুকে জড়িয়ে নিলাম। শ্বাশুড়ি সব শুনে কিছুক্ষণ থ হয়ে বসে থাকল, তারপর আমাকে ছেলের পক্ষ হয়ে বুঝাতে শুরু করলো।
বলল, বাচ্চা কাঁদছে, তাকে নিয়ে শুয়ে পড়ো।
প্রায় ভোর হয়ে আসলো, শুয়ে পড়লাম।

সেদিন থেকে আমার খাওয়া, ঘুম সব কোথায় যেন হারিয়ে গেল।
আমি সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, আর সেই মেয়ে একজন অশিক্ষিত আয়া। আমি কি করে এতোবড় অপমান সহ্য করবো।

তাকে সারাক্ষণ জিজ্ঞেস করতে লাগলাম, সেই মেয়ের সাথে তোমার কতোদূর সম্পর্ক। কি করেছো তার সাথে, কতোবার তার হাত ধরেছো, কতোবার তাকে জড়িয়ে ধরেছো, কতোবার তাকে ফোন করতে, তাকে কি কি গিফট করেছো, কোথায় কোথায় দেখা করেছো, কোন কোন রেস্টুরেন্টে দেখা করেছো, কোন পার্কে বসেছো, তাকে কতোবার ভালবাসি বলেছো ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন করতাম সারাক্ষণ।

সে আমার প্রতি বিরক্ত হতে লাগলো আস্তে আস্তে। আর আমি ধীরে ধীরে মানসিক রুগী হতে লাগলাম।একদিন আমার এক আত্মীয় মারা যাওয়ায়, আমার আব্বু আম্মু ভাই বোন বাসায় আসলো।

সেদিন রাতে সে বাহির থেকে আসলে, আমি তাকে বললাম, আমি ঐ মেয়ের সাথে কথা বলতে চাই। আমি ঐ মেয়ের কাছে যেতে চাই।
সে বলল, ঐ মেয়ের কাছে গেলে তোমাকে সতীনের সংসার করতে হবে।
তা শুনে, আমার পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে গেল।
আবারও দরজা বন্ধ করে, আমার নিজের গায়ে আমি আগুন ধরিয়ে দিলাম।
আবারও আমাকে দরজা ভেঙে বের করলো, গায়ে পানি ঢেলে আগুন নেভালো।
কিন্তু আমাকে ঐ অবস্থায় রেখে, সে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল।
আমার শ্বাশুড়ি আমাকে বলল, তোমার প্রতিদিনের নাটক আর ভাল লাগে না, তোমার জন্য আমার ছেলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল, যাও যেখান থেকে পারো আমার ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসো। রাত তখন ১ টা বাজে।

আমার ছোট ননদ, তার জামাই, চাচা শ্বশুর, চাচী শ্বাশুড়ি আরও অনেকে বাসায় চলে আসলো।

আমার ছোট ননদ সবার সামনে আমাকে বলল, ছেলেরা দশজনের সাথে প্রেম করলে কিছু হয় না, কিন্তু মেয়েমানুষ স্বামীর সাথে ঝগড়া করলে, তাকে বলে বেশ্যা।
আমি রীতিমতো হিজাবী, অথচ আমার ননদ আমাকে বানিয়ে দিল বেশ্যা।

যায় হোক, সেই রাতেই শ্বাশুড়ির কথা মতো ভাইকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম তাকে খুঁজতে।

তার কিছু ফ্রেন্ডের কাছে ফোন করে, তার খোঁজ পেলাম, সে কিছুতেই বাসায় আসবে না, তাকে স্যরি বলে, বললাম, আর ঐ মেয়েকে নিয়ে কোন কথা বলব না, বাসায় চলো।
অনেক বুঝিয়ে রাত প্রায় ২ টায় বাসায় নিয়ে আসলাম।
সব আত্মীয় স্বজন বুঝাতে লাগলো, কি করবা, দুটো সন্তান আছে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে, সব মেনে নাও, বাচ্চা দুটোকে মানুষ করো।

আমি কোন কথা না বলে, শুয়ে পড়লাম। সবকিছু আগের মতো, সংসার বাচ্চা, তাদের স্কুল।

কিন্তু, ভেতরের আগুনটা কিছুতেই নেভে না। একদিন ডিসিশন নিলাম, তার সাথে আর থাকবো না, শুধু নিজের সার্টিফিকেটগুলো নিয়ে এই বাসা থেকে চলে যাবো। তাঁর বাচ্চাদের সে, একা মানুষ করুক, এটাই তার শাস্তি।

কিন্তু আমি মা, বাচ্চাদের ছেড়ে যাবো ভাবতেই দুচোখ জলে ভরে আসে। সিদ্ধান্ত নিলাম, ছোট বাচ্চাটাকে সাথে নিবো, ঢাকায় আমার এক ফ্রেন্ড থাকে, আপাতত তার বাসায় কয়েকটা দিন থেকে, একটা চাকরি যোগাড় করে নেবো।একটা ছোট ব্যাগ, আমার সার্টিফিকেট আর আমার ছোট বাচ্চা এসব নিয়েই রওনা হলাম, অজানা পথের উদ্দেশ্যে।

বি:দ্র: দরকার ছিল: পরকীয়ায় জড়া‌নোর জন‌্য হয়ত ভালবাসার ঘাট‌তি ছিল ? ও‌য়েট করার দরকার ছিল ?
সু‌খের সংসার ছিল সন্তান একটু বড় হওয়া পর্যন্ত অ‌পেক্ষা কর‌লে সন্তান‌কে ‌দি‌য়ে বাবা‌কে প‌রিবর্তন করা সম্ভব ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com