তুমি ফিরে এলে
এমন যদি হতো
লক্ষ লক্ষ উন্মুখ জনতার সামনে
হঠাৎ তুমি এসে দাঁড়ালে,
রেইস কোর্স কিংবা গড়ের মাঠে ,!
চোখে চশমা ,গায়ে ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি,
আর হাতে সেই বিখ্যাত পাইপ।
তর্জনী উঁচিয়ে আকাশ কাঁপিয়ে তুমি বললে সেই কবিতা
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
বললে হে অসহায় ভাগ্যহত বাংলার মানুষ
তোমরাই আমার ভালবাসা।
তোমাদের মুক্তির জন্যই ছিলো আমার আজন্ম সংগ্রাম।
তখন আকাশে আনন্দাশ্রু,
চারিদিকে বিপুল করতালি ,
আর বিস্ময়ে তোমাকেই দেখা !
তোমার বায়ান্ন, ছেষট্টি, উনসত্তর, সত্তর, একাত্তর
অগণিত সংগ্রাম আর স্বপ্নের কথা ভেবে শ্রদ্ধাবনত হই , স্বপ্নবুনি,
স্বপ্ন দেখি শুধুই সোনার বাংলা।
অকস্মাৎ থমকে দাঁড়াই ঘৃণায় ক্রোধে
কি দুর্বিষহ পঁচাত্তর!
কি রক্তাক্ত পনেরো আগস্ট!
কি অকৃতজ্ঞ মানুষ,
মানুষ? হ্যাঁ এরা মানুষ !
তখন ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বর সড়কের
গাছের একটি পাতাও নড়ে না,
টপ টপ করে রক্ত এক সিঁড়ি থেকে অন্য সিঁড়িতে ,
টুঙ্গিপাড়া শোকে মুহ্যমান
দেশ অশান্ত দিশেহারা।
ইতিহাস বিকৃতির ছাঁচে ফেলে দেয়া হলো তোমাকে
বাঙালি ভুলতে থাকলো জাতির পিতাকে
একুশ বছর তুমি ছিলে না আমাদের।
কিন্তু সবকিছু স্তব্ধ করে দিলেও
নিঃশেষ করে দিলেও
আমাদের বিশাল আকাশ জুড়ে
তুমি আছো।
বাতাস বলে তুমি আছো ।
বাংলার প্রতিটি বালিকণা
বলে তুমি আছো।
বঙ্গোপসাগরের ঢেউগুলো তীব্র গর্জনে বলে তুমি আছো,
তুমি আছো।
তুমি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, তুমি আমাদের স্বাধীনতা, তুমিই বাংলাদেশ ।
তুমি বঙ্গবন্ধু, তুমি জাতির পিতা।
তুমিই আমাদের গর্বের ইতিহাস।
এমন যদি হতো , সত্যি হতো !
হঠাৎ তুমি ফিরে এলে
তোমার জন্মশতবর্ষে ।