চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক দিন। সবচেয়ে পরিচিত ও প্রাণঘাতী মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই প্রথম কোনও ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)৷ এতদিন কোনো ভ্যাকসিন ছিল না যা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে। মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে প্রথম ভ্যাকসিন হিসাবে শিশুদের জন্য RTS,S/AS01 malaria vaccine -এ ব্যবহারে অনুমোদন দিল WHO।
এই টিকাটির যে কেবল অনুমোদন দিয়েছে তা নয়, ব্যাপকভাবে এর ব্যবহার শুরু করার কথা জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস। এই টিকাটি মূলত শিশুদের জন্য তৈরি। কারণ, ফ্যানসিপেরাম ম্যালেরিয়ায় প্রতি দু’মিনিটে একটি করে শিশুর মৃত্যু হয় বিশ্বে। এই প্রতিষেধকটি জিএসকে’র তৈরি। যার নাম ‘মস্কুইরিক্স’।
কীভাবে ছড়ায় এই ম্যালেরিয়া? অ্যানোফিলিস প্রজাতির স্ত্রী মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী পরজীবী প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স (যা প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম নামে পরিচিত) মানুষের দেহে প্রবেশ করে। এই ম্যালেরিয়ায় প্রতি বছর গড়ে ৪ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। যাদের অধিকাংশই সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলের। এ ছাড়া, তাদের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যাও অনেক বেশি। প্রায় দু’কোটি মানুষের শরীরে প্রতি বছর এই পরজীবী সংক্রমিত হয় বলে জানা যায়। কয়েক দশক ধরে এই টিকা আবিষ্কারের জন্য লড়াই চালাচ্ছিলেন গবেষক-বিজ্ঞানীরা।
ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে। যা শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ম্যালেরিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক ডা. পেড্রো আলোনসো এই ভ্যাকসিনকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন। এটিকে নিরাপদ ভ্যাকসিন, পরিমিত মাত্রায় কার্যকরও বলেছেন তিনি।
এই আবিষ্কারের কথা টুইটে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেখানে বলা হয়েছে, আজ আরটিএস ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন ৩০ বছরের বেশি চেষ্টায় জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ইতিহাস তৈরি করল। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে ঘানা, কেনিয়া এবং মালাউইয়ের মতো দেশে পরীক্ষামূলকভাবে এই টিকার ট্রায়াল ও পর্যবেক্ষণ চলছিল।