গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১০ শিশুসহ ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয় । আহতের সংখ্যা বহু । রোববার (১৬ মে) ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘরে হামলা চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে অভিযোগ করেছে হামাস।
সাতদিন ধরে চলা এই লড়াই কখন শেষ হবে, তার কোনো আভাস মিলছে না। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসও ইসরায়েলে রকেট হামলা অব্যাহত রেখেছে।
গত কয়েক বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলার সাতদিন পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় পূর্ণশক্তিতে হামলা অব্যাহত থাকবে। এর আগে গাজায় আল-জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একটি ১২তলা কার্যালয় মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯২ জনে, যার মধ্যে ৫৮টি শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন এক হাজার ২০০ জনের বেশি। ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত বাড়ি থেকে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিতে দেখা গেছে ফিলিস্তিনিদের। তারা নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করছেন।
উদ্ধারকাজে সহায়তাকারী মাহমুদ হামিদ বলেন, এটি এক বিভৎস মুহূর্ত, যা কেউ মুখে বর্ণনা করতে পারবে না। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, এই হত্যাকাণ্ড অনিচ্ছাকৃত।
২০১৪ সালের পর থেকে গত কয়েক বছরের মধ্যে এটিই ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে চলা সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই। এ সহিংসতা নিয়ে রোববার জাতিসংঘের নিরপত্তা পরিষদে একটি বৈঠক হয়েছে।
এ দিন ইসরায়েলি পুলিশ ছুরিসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা সীমান্ত পার হয়ে জর্ডান থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছিলেন বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাতে হামাস ইসরায়েলের দিকে ১২০টি রকেট ছুড়েছে, এর অধিকাংশই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম ধ্বংস করে দিয়েছে। আর প্রায় ডজন খানেক রকেট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে গাজার ভেতরেই পড়েছে।
রকেট হামলার সাইরেন শুনে ইসরায়েলের তেলআবিব ও বীরশেবা শহরের বাসিন্দারা তাড়াহুড়া করে ভূগর্ভস্থ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে চলে যান। দৌড়ে এসব আশ্রয়স্থলে যাওয়ার সময় প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন বলে দেশটির চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রোববার ভোররাতে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনুসে হামাসের আঞ্চলিক নেতা ইয়াহিয়া আল সিনওয়ারের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে তারা।
সিনওয়ার ২০১১ সালে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৭ সাল থেকে গাজা অঞ্চলের হামাসের রাজনৈতিক ও সশস্ত্র শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালন করে আসছেন।