দেশে করোনাভাইরাসের নাইজেরিয়ার ধরন (ভেরিয়েন্ট) শনাক্ত হয়েছে। এ ধরনের নাম বি.১.৫২৫। করোনাভাইরাসের জিনোমের উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিসএআইডি) ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে করোনার এ ধরন শনাক্তের খবর প্রকাশিত হয়েছে। করোনার এ ধরন পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা।
জিসএআইডির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অন্তত আটজনের নমুনায় নাইজেরিয়ার ধরনটি পাওয়া গেছে। ঢাকার সাতজন এবং সুনামগঞ্জের একজনের দেহে এ ধরন পাওয়া গেছে। গত মার্চ ও এপ্রিলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ আট নমুনার মধ্যে ছয়টি বিসিএসআইআরের, একটি ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ এবং আরেকটি চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরীক্ষাগারে শনাক্ত হয়েছে।
করোনার জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশি এক বিজ্ঞানী নাম প্রকাশ না করার শর্তে শনিবার রাতে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশে এ ধরন আছে কি না। আমরা নাইজেরিয়ার ধরনটি বাংলাদেশে পেয়েছি। সে তথ্য জিসএআইডিতে প্রকাশিত হয়েছে।’
গত ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের বি.১.৫২৫ ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়। পরে নাইজেরিয়াতেও ধরনটি ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া ডেনমার্কসহ বিশ্বের অন্তত ২৩টি দেশে নাইজেরিয়ার ধরনটি শনাক্ত হয়েছে। পরে এটি করোনার নাইজেরিয়া ধরন হিসেবে পরিচিতি পায়।
বাংলাদেশি ওই বিজ্ঞানী বলেন, নতুন এ ধরন সম্পর্কে যতটুকু তথ্য আছে তাতে বলা যায়, এটা খানিকটা উদ্বেগের। তবে এখনই সরাসরি স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
এর আগে এ বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলের ধরনের অস্তিত্বের কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি), সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ গবেষণায় বলা হয়, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল—এই তিন দেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের তিনটি ধরন (ভেরিয়েন্ট) সবচেয়ে বেশি সংক্রামক।
ওই গবেষণায় এ বছরের ১৮ থেকে ২৪ মার্চ ৫৭ জন কোভিড-১৯ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করেন গবেষকেরা। তাঁদের মধ্যে ৪৬ জনের শরীরে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন শনাক্ত হয়, যা গবেষণায় মোট শনাক্তের ৮১ শতাংশ।