নাগার্নো-কারাবাখ ইস্যুতে আজারবাইজানের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজয়ের দায় স্বীকার করেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান। তবে দু’দেশের মধ্যে ছয় সপ্তাহের সংঘাতে পরাজয়ের পর বিরোধীদের পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
নাগার্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ। কিন্তু সেখানে বসবাস ছিল আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর মানুষদের। সেখানে নিজেদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সরকারও প্রতিষ্ঠা করেছিল তারা। সম্প্রতি তারই জেরে ছয় সপ্তাহ ধরে যুদ্ধ হয়েছে সেখানে। পরে রাশিয়ার মধ্যেস্থতায় দু’দেশের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ত্রিদেশীয় চুক্তিতে আর্মেনিয়াকে কারাবাখের বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ আজারবাইজানের হাতে ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাকুর দখলে নেয়া এলাকাগুলো থেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন আর্মেনীয়রা। নিজেদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছেন অনেকে।
ওই চুক্তি স্বাক্ষরের পর নিজ দেশে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়ে আর্মেনীয় সরকার। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক ফেসবুক পোস্টে মন্ত্রীর পদত্যাগের কথা জানান। তারপরও প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের ওপর সরে যাওয়ার চাপ বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় দেশটির প্রেসিডেন্ট আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন।যা ঘটেছে সেটির পুরো দায় নেওয়ার কথা ফেসবুক পোস্টে লিখেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। বলেন, দেশকে স্থিতিশীল করা ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন তার দায়িত্ব।
এদিকে, আমেরিকা ও ফ্রান্স সম্প্রতি স্বাক্ষরিত নাগর্নো-কারাবাখ শান্তিচুক্তি পুনর্মূল্যায়নের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ এনে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) মস্কোয় ল্যাভরভ বলেন, নাগরনো-কারাবাখে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তাকে আর্মেনিয়ার পক্ষে পরিবর্তনের যে চেষ্টা আমেরিকা ও ফ্রান্স করছে তাকে সফল হতে দেবে না রাশিয়া।
ল্যাভরভ আরও বলেন, রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ওই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে সংঘর্ষপীড়িত নাগরনো-কারাবাখে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের তৎপরতা চালানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ওই অঞ্চলে মানবিক ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা চালাতে জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার প্রতিও আহ্বান জানান।