ভারতের মণিপুরে জাতিগত সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে। কর্মকর্তারা নিহতের এই সংখ্যা জানালেও অসমর্থিত সূত্রে তা আরও বেশি বলে দাবি করা হয়েছে। চলমান সহিংসতায় আহতের সংখ্যা দেড় শতাধিক। শনিবার ইমফল উপত্যকার জীবন স্বাভাবিকতায় ফিরতে শুরু করেছে। দোকান ও বাজার পুনরায় চালু হয়েছে এবং সড়কে নেমেছে প্রাইভেটকার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার আরও সেনা ও কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল প্রধান সড়ক ও এলাকায়। শুক্রবার যেসব স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সশস্ত্র ব্যক্তিদের সংঘর্ষ হয়েছিল সেসব স্থানে রোডব্লক ও কর্ডন করে রাখা হয়েছিল।
শিক্ষার্থীসহ প্রচুর মানুষকে ইমফল বিমানবন্দরে জড়ো হতে দেখা গেছে। তারা সহিংসতা কবলিত রাজ্যটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
আসাম রাইফেলসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব নাগা শিক্ষার্থীকে ইমফল থেকে কোহিমায় পাঠানোর জন্য।
বুধবার রাতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের অনেকে জানিয়েছে, বেশ কিছু গ্রামে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলিভুক্ত আদিবাসী মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘিরে বুধবার রাতে মণিপুরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর রাজ্যটিতে প্রায় ১০ হাজার সেনা, আধা-সামরিক ও কেন্দ্রীয় পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
মণিপুরের জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ মেইতেই সম্প্রদায়। এদের বেশিরভাগের বসবাস ইমফল উপত্যকায়। রাজ্যের ৪০ শতাংশ জনসংখ্যা নাগা ও কুকি সম্প্রদায়ের। এই দুই গোষ্ঠীর মানুষেরা উপত্যকার আশেপাশের পাহাড়ি জেলাগুলোতে বসবাস করে।
সরকারিভাবে শনিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৪ জন বলে জানানো হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, চুরাচান্দপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে ১৬ জনের মরদেহ রাখা হয়েছে। ইমফল পূর্ব জেরার জওহরলাল নেহেরু ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর মর্গে আছে ১৫ রজনের মরদেহ। ইমফল পশ্চিম জেলায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে চুরাচান্দপুর জেলায় দুটি পৃথক বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ সশস্ত্র ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, মোট ১৩ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।