স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কটা প্রতিনিয়ত অবনতির দিকে যাচ্ছে এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দেশ চীনের। এর মধ্যে তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলার অংশ হিসেবে তিনদিনের সামরিক মহড়ার শুরু করেছে চীন।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার কয়েক ঘণ্টার পরই সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে। শনিবার (৮ এপ্রিল) তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, বেইজিংয়ের ৭১টি সামরিক বিমান, নয়টি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ানের মধ্যরেখা অবৈধভাবে অতিক্রম করেছে।
তাইওয়ানের মধ্যরেখাটি অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভক্ত। বার্তা রয়টার্স জানিয়েছে, তাইওয়ানের কাছে অবস্থিত পিংটানের দ্বীপের দিকে যাওয়ার সময় এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে চীনা বাহিনী।
এ প্রসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, এই সামরিক মহড়া তাইওয়ান দ্বীপের চারপাশে টহল ও অগ্রগতির চেষ্টা চালাবে চীন। এমনকি ঘেরাও ও প্রতিরোধের ভঙ্গি তৈরি করবে।
এবারের মহড়ায় দূরপাল্লার রকেট আর্টিলারি, নৌ বিধ্বংসী জাহাজ, ক্ষেপণাস্ত্র বোট, বোমারু বিমান ও জ্যামার মোতায়েন করেছে চীন।
তাইওয়ান নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে আসলেও চীন নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে আসছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই শনিবার বলেন, তার সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে। কারণ, দ্বীপটি চীনের ‘নিরবচ্ছিন্ন কর্তৃত্ববাদী সম্প্রসারণবাদ’ এর মুখোমুখি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাককলের নেতৃত্বে মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি। মাইকেল ম্যাককল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে শান্তির জন্য, কোনও সংঘাতের জন্য নয়।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে তাইপের ঘণিষ্ঠ যোগযোগের বিষয়টিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না বেইজিং। পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) পূর্ব থিয়েটার কমান্ড শনিবার সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে জানায়, ১০ এপ্রিল পর্যন্ত তাদের ‘যুদ্ধের প্রস্তুতিমূলক মহড়া’ চলবে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, কোনও ধরনের বিরোধ না বাড়ানো এবং বিরোধ সৃষ্টি না করার ভিত্তির মনোভাব নিয়ে বেইজিংয়ের এ ধরনের মহাড়ার প্রতিক্রিয়া জানাবে তাইপে।
গত আগস্টে তাইওয়ানে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের সফরে নিয়েও উত্তেজনা তৈরি হয় অঞ্চলটিতে। তাইওয়ানের চারপাশে গতবারও বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালায় শি জিনপিং বাহিনী।