রাখাইনে জোরদার হওয়া কথিত ‘অপারেশন ক্লিয়ারেন্স’ নামের অভিযানের মধ্য দিয়ে সেখানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ কমিশন। মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার হরণের প্রতিকার দাবি করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কথিত অভিযানের অংশ হিসেবে আগস্টে চক্তো, রথিডং ও মিনবাও অঞ্চলের প্রায় ১০টি গ্রামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী হামলা চালিয়ে কয়েক শত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং সেই ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বরে অভিযান জোরদার হয়। সম্প্রতি সীমান্তে সৈন্য সমাবেশসহ সীমান্ত সংলগ্ন মংদু অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ধরে নিয়ে গেছে বলে জানায় ঢাকার একাধিক সূত্র।
রাখাইন ও শান প্রদেশের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের চালানো অভিযান যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। জেনেভায় মানবাধিকার কমিশনের ৪৫তম অধিবেশনে তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা এবং অন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন এখনও চলছে। রাখাইন ও শান প্রদেশের সশস্ত্র সংঘাতে রাখাইন, শান, ম্রো, দায়েগনেত ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আক্রান্ত হওয়া ক্রমেই বাড়ছে।
বেসামরিক নাগরিকদের গুম ও বিচারবর্হিভূত হত্যা, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি, বিনাবিচারে আটক, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু এবং বেসামরিক জনগণের সম্পত্তি নষ্টের দিকে নজর ফেরানোর আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘মংদু অঞ্চলে সেনাবাহিনী মুসলিম রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে এবং অনেককে ধরে নিয়ে গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’ তিনি বলেন, ‘তারা যে শুধু পুরুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে তাই নয়, গত সপ্তাহে বেশ কয়েকজন নারীকেও আটক করেছে এবং তারা এখনও ফেরত আসেনি।’
২০১৭ সালে রাখাইনে মিয়ানমারের চালানো সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ওই অভিযানের কারণে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে বর্তমানে গণহত্যার অভিযোগে বিচারের মুখে রয়েছে মিয়ানমার।
সুত্র: বাংলা ট্রিভিউন