স্পেনে বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা দিবস পালন
স্পেন-বাংলাদেশ সম্পর্ক দ্রুত বিকশিত হচ্ছে- স্পেনের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাসে উদযাপন করা হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। স্থানীয় সময় রোববার (২৬মার্চ) সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতেই দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ এনডিসির নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে দূতাবাস মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভার শুরুতে রাষ্ট্রদূত সবাইকে নিয়ে জাতির পিতা ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। এরপর মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা থেকে পাঠানো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয় এবং প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়।
এদিকে ২১ মার্চ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের হলে জাঁকজমক আয়োজনে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কূটনীতিকদের সম্মানে এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্পেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের পাশাপাশি মাদ্রিদস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কূটনীতিক, মিশন প্রধানও পররাষ্ট্র দপ্তর,বৈদেশিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সম্পর্কিত, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রাজনীতবিদসহ অনারারি কউন্সিলর,স্প্যানিশ ব্যবসায়ী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দেড় শতাধিক অতিথির উপস্থিতিতে এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্পেন সরকারের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইসাবেলা কাস্ত্রো ফারনান্দেস।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ এনডিসি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনির্বাণ স্মৃতির উদ্দেশে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ও বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। কৃতজ্ঞতা জানান সব বন্ধুরাষ্ট্র, সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি যারা মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
স্প্যানিশ ভাষায় তার বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বাংলাদেশ আজ বৈশিক পরিমন্ডলে বিস্ময়, যার মূল ভিত্তি রচনা করে গেছেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, ‘আমাদের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে পরিপূর্ণতা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণের পর আজকের বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ পরিণত হওয়ার অভীষ্ট লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। রাষ্ট্রদূত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করে বাংলাদেশকে একটি প্রগতিশীল, প্রযুক্তিভিত্তিক, উন্নত ও মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে সবাইকে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসাবেলা কাস্ত্রো ফারনান্দেস বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে স্পেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের,বর্তমানে দুই দেশের এই বন্ধুত্ব,সম্পর্ক দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। স্পেন বর্তমানে বাংলাদেশের চতুর্থ রপ্তানি গন্তব্য উল্লেখ করে তিনি, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি বাণিজ্যের পরিধি বৃদ্ধিতে এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিবিধ ক্ষেত্রে বিদ্যমান অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে স্পেন বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করে পত্যয় ব্যাক্ত করেন। তিনি স্পেন ও বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করেন।
পরে স্পেন সরকারের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইসাবেলা কাস্ত্রো ফারনান্দেসকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও তার সহধর্মিণী ফরিদা আক্তার স্বাধীনতা দিবসের কেক কাটেন।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান এটিএম আব্দুর রউফ মণ্ডল, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ, কাউন্সিলর দ্বীন মোহাম্মদ ইমাদুল হক (ডিপ্লোমেটিক উইং), কাউন্সেলর মো. মোতাসিমুল ইসলাম (লেবার উইং), বার্সেলোনায় বাংলাদেশের অনারারি কন্সুল রামন পেদ্র বেরনাউস, আওয়ামী লীগ স্পেন শাখার সভাপতি এসআরআইএস রবিন, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম সেলিম, সহ-সভাপতি একরামুজ্জামান কিরণ, কবির হোসেন, মো. তোতা কাজী, স্পেন আওয়ামীলীগেরভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তামিন চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক এফএম ফারুক পাভেল, বেলাল আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, তাপস দেবনাথ,কাতালোনিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আমির হোসেন আমু প্রমুখ।