মর্গে এক নারী ও এক কন্যাশিশুর মরদেহ ধর্ষণের অভিযোগে মো. সেলিম (৪৮) নামে এক ব্যক্তির তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গের পাহারাদার হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিমের আদালত এই আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীন ভূঁইয়া বিষয়টি নাগরিক খবরক নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেলিমকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে সেলিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তিনি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট খাজা রোড এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন সেলিম।
সিআইডি সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরের চকবাজার থানা এলাকা থেকে আনুমানিক ৩২ বয়সী এক নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। একই বছরের ২৫ এপ্রিল ১২ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না জানার জন্য মর্গের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক মরদেহ দুটি থেকে বীর্যের নমুনা সিআইডির ল্যাবে প্রেরণ করেন।
সেখানে দুই মরদেহে একই ব্যক্তির বীর্য পাওয়া যায়। এরপর চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তবে তদন্তকালে দুই মরদেহের ক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে ধর্ষণের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তারপরও পেছনে লেগে থাকে সিআইডি। একপর্যায়ে তদন্তে পাওয়া যায় দুটি মরদেহ ময়নাতদন্তের পূর্বে দীর্ঘক্ষণ চমেকের মর্গে ছিল।
ওই মর্গের পাহারাদার ছিলেন সেলিম। সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে সেলিম ওই দুই মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেছেন বলে প্রমাণিত হয়। এরপর সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। একইদিন তার বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ কমল ভৌমিক বাদী হয়ে দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেন।
সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের সুপার (এসপি) মো. শাহনেওয়াজ খালেদ জাগো নিউজকে বলেন, সেলিমের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুই মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাছাড়া সেলিম নিজেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। গোপন অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে এর আগেও পাঁচলাইশ থানায় একটি নারী নির্যাতনের মামলা পাওয়া যায়।