ভেবেছিলাম অন্ধকার পেরিয়ে যাব
যেখানে বিস্তীর্ণ মাঠ, মাঠের পরে ধান ক্ষেত
আমি ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত দেহে শুয়ে রবো বছরের পর বছর,
বৃহস্পতির আলো আঁধার ছুঁয়ে আবার জেগে ওঠবো বৃক্ষের মতো;- পৌষের শীতল হাওয়ায় পাল তুলে দেবো
অজানার উদ্দেশ্যে;
হে আমার শত জনমের অন্ধকার আমায় গ্রাস করো,
সূর্যের ভেতর মানুষেরা হারায় পৃথিবী থেকে দূরে, কোথাও একটু শান্তির পরশ-
আমার তৃষ্ণার্ত আকাশজুড়ে বৃষ্টির জলে ভিজিয়ে দিয়ে যাও। আমি শান্ত স্থির চিত্তে হারিয়ে যেতে চাই কালের গহব্বরের।
একটুকরো খোলাকাশের নীচে অন্ধকার মূছে গাঙচিলের ডানায় সূর্যস্নানে পৃথিবী আবার বিশুদ্ধ জননী হয়ে ফিরে আসুক মাটির ঘরে, ঘাসের ডগায়, নদীর ঢেউয়ের তালে, মাঝিদের গানে;
তুমি এখনো অন্ধকার স্পর্শ করোনি, নিকষ কালো অন্ধকার; বুকের পাঁজর ভাঙা অন্ধকার,
ক্ষুধার্ত মানুষের চোখে মুখে অন্ধকার;
তৃষ্ণার্ত জিভ শুষে শুষে বরফ শীতল জল ছুঁয়ে
নেমে আসে গাঢ় ঘুমের অন্ধকার; অশান্ত সমুদ্র
আকাশের নীলে নীলাক্ত রজনী পেরিয়ে যায় চিলেকোঠা।
অতঃপর, আমি দেখেছি শত মানুষের ভিড়ে, কত অমানিশার অন্ধকার, রক্ত আর পুঁজের ভিতর অন্ধকার,
শহরে বন্দরে মিছিলে মিছিলে অন্ধকার
অন্ধকার গেঁথে গেছে আমাদের মননে, মগজে;
তবু্ও, আমি অন্ধকারের ভিতর শুয়ে থাকি একা মৃত- মানুষের মতো নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে।
আর,আমি অন্ধকার ভালোবেসে অন্ধকারেই ফিরে যাবো,
নিঃশব্দের পায়ে পায়ে শ্মশানের নীরবতা ভেঙে- গাঙচিলের বেশে।