1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লায় ডি‌বির পৃথক অ‌ভিযা‌নে ইয়াবা ফে‌ন্সি‌ডিল আটক ৩ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত – এম সাখাওয়াত হোসেন দে‌শের প্রয়োজ‌নে বিএনসিসির সদস্যরা বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ কর‌বে – সেনাপ্রধান কু‌মিল্লায় সাংবা‌দিক‌দের সা‌থে পু‌লিশ সুপা‌রের মত‌বি‌নিময় নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপির র‍্যালিতে কৃষক দলের অংশগ্রহন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগ‌ঞ্জে বিএন‌পির র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রেমে ওঠা- মোহাম্মদ আইয়ুব

নাগ‌রিক খবর অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪
  • ৮৬ বার পঠিত

সচরাচর শুনি মানুষ প্রেমে পড়ে। প্রেমে পড়ে মানুষ সুখের নীড় রচনার স্বপ্ন দেখে।
প্রেমে পড়া প্রেমিক যদি হয় সৎকুলজাত আর প্রেমিকা হয় সতী তবে পরিণয়ে হয় সোনায় সোহাগা। সে ঘর হয় আলোকময় ও সুখৈশ্বর্যপূর্ণ। ভোরের ঝির ঝির কোমল হাওয়ায় ফুলের সুবাসে ভরে ওঠে সে ঘরের আঙ্গিনা । লোকে বলে সতীর গুণে পতির জয়। আর পতির ভাগ্যে সতীর ঘর।

যারা প্রেমে উঠে, তারা প্রেমিক/প্রেমিকা নয়। তরা বেতাল। এরা প্রেমের চিরায়ত সৌন্দর্য বিনষ্ট করে। এরা জাতে উঠলেও বজ্জাতি ছাড়তে পারে না। এরূপ জনকতেক প্রেমে উঠা বেতালের জনশ্রুত কাহিনি নিম্নে চিত্রায়ণ করার চেষ্টা করলাম।

মনীষা লেখক আহমদ ছফার লেখা “মরণ বিলাস” নামক একটি কিতাব বছর বিশেক আগে পড়েছিলাম। কিতাবটিতে দুইজন বেতালের চরিত্র চমৎকার ভাবে বর্ণনা করছেন। এক বেতালের অংশ বিশেষ নিচে সংক্ষেপে তোলে ধরা হলো।

উপন্যাসের একটি চরিত্র শায়খ সাহেব। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফজলে এলাহির জন্মদাতা পিতা। দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে পাস করা নাম করা মৌলানা। তার বয়ান শুনার জন্য লাখ লাখ মানুষ অধীর আগ্রহে বসে থাকতেন। ভক্ত – মুরিদরা তার হুকুম নিমিষে তামিল করতেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফজলে এলাহির বয়স যখন ৭/৮ বছর তখন তার মা মারা যান। শায়খ সাহেবের বয়স তখন ৫৬ বছর।

বিবির মৃত্যুর পর একমাত্র সন্তান ফজলে এলাহির দিকে তাকিয়ে শায়খ সাহেব ঘোষণা দেন, তিনি ইহকালে আর নিকা করবেন না। বাকি জিন্দেগি ইবাদত – বন্দেগি করে, জনসেবায় কাটিয়ে দিবেন। তার মতো এমন বুজুর্গ ব্যক্তি সংসারের বেড়াজালে না আটকিয়ে, মহৎ কাজে আত্মোৎসর্গ করবেন, এটাই স্বাভাবিক।

বছর না ঘুরতেই মুরিদদের আবার বয়ান করলেন, তিনি ঠিক সংসারে প্রবেশ করতে চান না। তবে তাকে সব কাজ একা একা দেখাশুনা করতে হয়। এতে আল্লাহর ইবাদতে ঘাটতি পড়ছে। এই বয়সে তার নিকা করার খায়েস নাই। তবে কাজকাম ঠিকঠাক মতো করতে একজন খেদমতগারনি বড়ই প্রয়োজন। এতে ধর্ম-কর্মে ব্যাঘাত ঘটবে না। কারো মেয়েতো আর এমনে এমনে দেবে না। মুরিদরা সমস্বরে বলে উঠলো, তাইতো। শুধু একজন খেদমতগারনির অভাবে হুজুরের কষ্ট হবে, ইবাদতের খেলাপ হবে, তা হতে পারে না।

উপযুক্ত খেদমতগারনি অন্বেষণে প্রধান মুরিদদের মধ্য থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হলো। কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ময়াল শেখের ১২/১৩ বছরের কন্যা বুলিকে হুজুরের খেদমতগারনি হিসেবে মনোনয়ন দিলেন।
ময়াল শেখের মেয়ে হুজুরের বাড়িতে আসার পর থেকে বাড়ির পরিবেশ পালটে যেতে লাগল। হুজুরের অবর্তমানে জোয়ান মুরিদদের অন্দরে ডেকে নিত। ঠাট্টা মশকরা করত। হুজুর নিজেও ধীরেধীরে এই কচি মেয়ের প্রেমে উঠতে লাগল। এতে পিতার প্রতি ফজলে এলাহিরও ঘৃণা থেতিয়ে উঠতে লাগল।

একদিন আসরের নামাজের পর ফজলে এলাহি ভিতরের রুমে শুয়েছিল। বাবার রুম থেকে খিল খিল হাসির শব্দ শুনে, বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে, ময়াল শেখের মেয়ে বুলি তার বাবা শায়খের গলা জড়িয়ে দুল খাচ্ছে। আর আবদার করে জিজ্ঞেস করছে-
মাওলানা, আমি তোমার কে?
-তুমি আমার নাতনি।

নাতনিতো ভালা। কিন্তু এমন করে গতর হাতাও ক্যান? -কসবরে গতর হাতাইতে দিলে খুব সওয়াব।
কিন্তু রাতে তুমি আরো বহুত মন্দ কাজ করো। তুমি একজন মাওলানা মানুষ। এসব কুকাম করতে তোমার শরম লাগে না? –

-শরম লাগব ক্যা? একবার হে কাজ করলে আল্লাহ একেকটা জিহাদের সওয়াব বকশিশ করেন।
জিহাদ কী জিনিস গো?
-সত্তর হাজার কাফের মারলে যে সওয়াব, কসবের সাথে বিবি একবার ঘুমালে আল্লাহ সেই সওয়াব আমলনামায় বকশিশ করেন।
এই কথা বলে দুজনে ভরদুপুরে কাফের মারতে লেগে গেল।

লেখক আহমদ ছফা এইপর্যায়ে যে অংশটুকু লেখেননি, তা হয়তো নিম্নরূপ ছিল-
এক দিকে ময়াল শেখের মেয়ে বুলির বয়স বেড়ে পূর্ণযৌবনা হওয়ার সাথে সাথে কাফের মারার সংখ্যাও বাড়তে থাকে। কোন দিন এক লাখ চল্লিশ হাজার আবার কোন কোন দিন দুই লাখ দশ হাজার পর্যন্ত কাফের বধ করছে।

অন্যদিকে শায়খের বয়স বাড়ার কারণে কাফের মারার সময় হাঁফিয়ে ওঠে। নিশ্বাস বড় হয়ে আসে। দম নিতে কষ্ট হয়।

৬ বছর পর হুজুরের বয়স ৬২ আর বুলির বয়স ১৮ তে ঠেকল। একদিন কাফের মারার সময় হুজুর হাঁফাতে হাঁফাতে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ল। নিশ্বাস দুই দিক দিয়ে বের হচ্ছে। তখন বুলি বলল-
কী গো তুমি এমন করছো ক্যান?
>কাফের মারা কী কম মেহনতের কাজ?
মেহনত হোক আর যা ই হোক আমাকে কাফের মারতে হবে, এখনই আমার কাফের মারার উপযুক্ত বয়স।

এদিকে হুজুরের পরাণ যায়যায়। হুজুর হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন, ওগো তুমি আজকে সত্তর হাজার একজন কাফের মারবে।
ভাংতিটা কেড়া? > আরেকটা– আর —– একটা– আমি– নিজে লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর———–।

(২)
সেদিন কবি চিন্তাবিদ শাহজাহান ভাইকে বলতে শুনলাম-
৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ এক টিকটকার জোয়ান মেয়ের প্রেমে উঠে তাকে বিয়ে করার খায়েস হয়। বুড়ার টাকা-পয়সা আর ধন – সম্পত্তির কমতি নাই। সম্পত্তির লোভেপড়ে বুড়োর খায়েস মেটাতে উক্ত টিকটকার তরুণীও এগিয়ে আসে। দুজনে বিয়ের পিঁড়িতে বসল।

বিয়ের সপ্তাহ দুএক পর বুড়োর উত্থান জনিত ত্রুটি ( Erectile Dysfunction) দেখা দেয়। দুজনে শলাপরামর্শ করে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শক্তিপদ ধরের শরণাপন্ন হলো।
ডা.শক্তিপদ- রোগী তোমার দাদা না বাবা?
ডাক্তারের এমন প্রশ্নে দুজনই খানিকটা বিব্রত।
>ওনি আমার বিলাভেড স্বামী।
উত্তর শুনে এবার ডাক্তার বিব্রত।
ডা. শক্তিপদ- সমস্যা কী বলো।
>আমার হাজব্যান্ডের Erectile Dysfunction.
ডা. শক্তিপদ- উত্থান ত্রুটি। কবে থেকে?
>আমাদের বিয়ে হয়েছে দুই সপ্তাহ। প্রথম সপ্তাহে দুই/ তিন দিন দেখা গেছে। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মোটেও উত্থান হচ্ছে না।

ডাক্তার সাহেব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন, ওনার শারীরিক কোন সমস্যা নাই। ওনার নিয়মিত দুধ খেতে হবে।

>আমিতো রোজরাতেই খেতে দিই। ওনিইতো খান না। খালি কচলাকচলি আর কচড়াকচড়ি করে। নিত্যরাতে অনিয়ন্ত্রিত মন্থনে আমার বিল্ববৃক্ষের ফল সদৃশ পীনোন্নত কুচদ্বয় অরইজ্জা (ঢিলা) হয়ে গেছে।

ডাক্তার বললেন- জনাব শুধু চরহঁছড়িলে (মাখামাখি করলে) চলবে না। দুধ পান করতে হবে। দুধে আছে- প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন-১২, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস ও জৈব এসিড। এতে প্রধান প্রোটিন- কেসিন, প্রধান শর্করা- ল্যাকটোজ এবং প্রধান জৈব এসিড- ল্যাকটিক এসিড রয়েছে। দুধ একটি সুষম পানীয়। নিয়মিত কমপক্ষে এক গ্লাস দুধ পান করলে দেহের অস্থি ও দাঁত মজবুত হবে। দেহের সব পেশি শক্ত হবে।

বুড়ো বলল- রতিশক্তি বর্ধক কোন ঔষধাদি থাকলে দেন।
ডা. শক্তিপদ- রতিশক্তি বর্ধনের কোন দারু স্বয়ং রতির পতি কামদেবতা মদন দেবও বাতলিয়ে দেয়নি। আমি কোত্থেকে দেবো।

নিয়মিত দুধ পান করার পরও সাগরের মরা লইঠ্যা মাছ আর তাজা হয় না। তাই তারা সুখের অভিনয় করে, টিকটক আর ইউটিউব করে দিন কাটায়।
এদেরকে লোকজন লুচ্চা, লম্পট কিংবা বদমাস খেতাবে ভূষিত করতে শুনা যায়। এই শব্দগুলি উচ্চারণ করতে বা লিখতে আমার অরুচি হয় হেতু আমি তাদেরকে বেতাল গোত্র ভুক্ত করলাম।

লেখক- মোহাম্মদ আইয়ুব
পুলিশ পরিদর্শক, লামা সার্কেল অফিস
বান্দরবান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com