1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রানা, ও মেহেবুব হোসেন রিপনের নেতৃত্বে এক বিশাল র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সিপিজের খোলা চিঠি ড. ইউনুসকে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম গ্রেফতার শপথ নিলেন নতুন তিন উপদেষ্টা কু‌মিল্লায় ডাকাতির নাটক সাজিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতিজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা ক‌রে চাচা রাজধানীর কাকরাইলে সভা সমা‌বেশ নি‌ষিদ্ধ

টি-‌টো‌য়ে‌ন্টিতে ব‌্যর্থ টাইগাররা ! প‌রিবর্তন জরুরী

নাগ‌রিক খেলাধুলার খবর:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১
  • ৬৭৩ বার পঠিত

টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের গন্তব্য কোথায় তা হয়তো ক্রিকেটারদের নিজেদেরই জানা নেই। সীমিত ওভারের এই ফরম্যাটের ধাঁচ তারা এখনও বুঝ‌তে পা‌রে‌নি । কিন্তু সবকিছুরই তো একটা শেষ আছে! হয়তো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যর্থতা নতুন শুরু এনে দেবে বাংলাদেশকে। ব্যর্থতা থেকে যদি দারুণ কিছু হয় তাহলে তো ব্যর্থতাই ভালো! ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশের ‘আসল’ অবস্থা জানতে এমন একটি ব্যর্থতা যেন প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশ দল এই ফরম্যাটে ঠিক কতটা খারাপ? সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড কিংবা নামিবিয়ার দৃষ্টিনন্দন খেলাই সেই উত্তর জানিয়ে দিয়েছে।

তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটকে ভিন্ন তিনটি জাহাজ হিসেবে ধরলে এগুলোর তিন ‘ক্যাপ্টেন’ তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক ও মাহমুদউল্লাহ। যেকোনও গন্তব্যে কত ভালোভাবে পৌঁছানো যাবে তার পুরোটাই নির্ভর করে জাহাজের নাবিক ও ক্যাপ্টেনের ওপর। অন্য দুই ফরম্যাটের ‘জাহাজ’ কোনোমতে অথই সাগর পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা রাখলেও টি-টোয়েন্টির বাংলাদেশি ‘জাহাজের’ সেই সক্ষমতাই যেন নেই। গত একযুগে এই জাহাজের ‘ক্যাপ্টেন’ করা হয়েছে অনেককেই। কিন্তু কেউই ঠিকঠাক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি! তাই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ‘নাবিক’ পরিবর্তন করার সময় হয়ে গেছে! শুধু ‘নাবিক’ নয়, সাফল্যের সঙ্গে গন্তব্যে পৌঁছাতে ‘ক্যাপ্টেন’ পরিবর্তনও সময়ের দাবি।

সুপার টুয়েলভে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় স্কোর করলেও ভুল ক্যাপ্টেন্সির কারণে জেতা হয়নি বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ বলে চার রানের প্রয়োজন থাকলেও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ব্যাটেই বলের সংযোগ ঘটাতে পারেননি। আর ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে তো নাস্তানাবুদ হয়েছে টাইগাররা।

বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে প্রচণ্ড বিরক্ত অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার মার্ক ওয়াহ। ফক্স স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশের ব্যাটারদের সমালোচনা করে বলেন, ‘খুবই বিরক্তিকর ব্যাটিং। জানি অস্ট্রেলিয়া ভালো বোলিং করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সেটি কখনোই আন্তর্জাতিক মানের নয়। এটা দেখাও খুব বিব্রতকর। এটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, কিন্তু এমন ব্যাটিং তৃতীয় শ্রেণির ক্রিকেটেও দেখা যাবে না।’

কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব অনেক বড় ‘এক্স ফ্যাক্টর’। আইপিএলে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে চেন্নাই সুপার কিংস নয়বার ফাইনাল খেলে। তার নেতৃত্বের জাদুতেই ফ্রাঞ্চাইজি দলটি চারবার শিরোপা জিতেছে। তবে উল্টো উদহারণও আছে। বিরাট কোহলির দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দারুণ সব ক্রিকেটারকে নিয়ে ফাইনাল খেলতে পারেনি একবারও। কোহলির দুর্বল নেতৃত্বই বেঙ্গালুরুর ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। সবশেষ আসরে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি বেঙ্গালুরুর নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ‘নতুন শুরু’র পথে মাহমুদউল্লাহকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে ভালো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া জরুরি। আপাতদৃষ্টিতে এক্ষেত্রে সাকিব আল হাসান ছাড়া কেউই নেই। যদিও বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থ হওয়া মাহমুদউল্লাহ টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছাড়ার ব্যাপারে এখনও কিছু বলেননি। বলটা বোর্ডের কোর্টেই পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।

তিন ফরম্যাটের মধ্যে তুলনা হলে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ কিছুটা ভালো দল। ৫০ ওভারের ম্যাচে সাফল্যের পেছনে ঢাকা লিগের ভূমিকা রয়েছে। কাঠামোগত কারণে টেস্টে বাংলাদেশ অত মজবুত না হলেও কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের চেয়ে অন্তত ভালো। মাঝে মধ্যে ভালো কিছু স্পেল এবং বড় জুটি বড় দৈর্ঘ্যের খেলায় চোখে পড়ে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি এলেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের গায়ে যেন জ্বর এসে যায়। কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে বেশকিছু সুবিধা আদায় করলেও আদতে কুড়ি ওভারের খেলায় বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতেই। চার-ছক্কার এই ফরম্যাটে ব্যাটারদের দুর্বলতা লক্ষণীয়। এবারের বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ দলগুলো তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অসহায় আত্মসমর্পণের পেছনে তাদের নেতিবাচক মানসিকতাই দায়ী। অথচ এই ফরম্যাটে খেলোয়াড়দের লড়াকু কিংবা ইতিবাচক মানসিকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১০-১২ বছর আগে যে মানসিকতা ছিল সেখান থেকে পিছিয়ে পড়ছে ব্যাটাররা। ২০০৬ সালে টি-টোয়েন্টি যুগে প্রবেশ করে আশরাফুল-আফতাবরা যেভাবে ভয়যরহীন ক্রিকেট খেলতেন, এখন কোনও ক্রিকেটারের মধ্যে তা দেখা যায় না। বড় দলগুলোর পাশাপাশি আফগানিস্তান, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড কিংবা ওমানের মতো দল ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলছে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা করছে উল্টোটা। স্কোরবোর্ডে বড় রান দেখলে কিংবা শুরুতে কিছু উইকেট হারিয়ে ফেললে খোলসবন্দি হয়ে যাচ্ছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। হারার আগে হেরে বসার মানসিকতা এই ফরম্যাটে পিছিয়ে দিচ্ছে তাদের। তাই কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে উন্নতি চাইলে ক্রিকেটারদের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।

সাবেক ক্রিকেটার আফতাব আহমেদ যেমন বললেন,টি-টোয়েন্টিতে ঝুঁকি নিতেই হবে। এখানে মারতে গিয়ে উইকেট খোয়ানোর আশঙ্কা থাকবে। সেই চিন্তা করে তো আর শটস খেলা বন্ধ করা যাবে না। টি-টোয়েন্টি এমনই। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যাটারদের মধ্যে এই মানসিকতার পরিবর্তন না হবে ততক্ষণ সাফল্য পাওয়া কঠিন।

নেতিবাচক মানসিকতার দায় পুরোটা আবার ক্রিকেটারদের কাঁধে দিলে হবে না। কেননা ঘরের মাঠে তারা কখনোই ‘ভালো’ উইকেটে খেলার সুযোগ পায় না। এ ধরনের উইকেটে শটস খেলার অভিজ্ঞতা বড় মঞ্চে সফল হতে অনুপ্রেরণা জোগায় ব্যাটারদের। কিন্তু দেশের মাটিতে অনভিজ্ঞতার কারণে ভালো উইকেট পেয়েও জ্বলে উঠতে পারে না তারা। বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাউন্ডারি লাইনে বেশ কয়েকজন ব্যাটার আউট হয়েছেন কেবল অভিজ্ঞতার অভাবে। দারুণ শটস খেললেও সীমানাছাড়া করতে পারেননি তারা। প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএল আর জাতীয় লিগ হোক, ঘরোয়া ক্রিকেটে দাপটের সঙ্গে খেলেন স্পিনাররাই। টার্নিং উইকেটে ব্যাটারদের বাউন্ডারি কিংবা ওভার বাউন্ডারি মারার সুযোগ থাকে না। স্পিনবান্ধব উইকেটে খেলতে খেলতে নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি হওয়া ব্যাটাররা বিদেশের স্পোর্টিং উইকেট খেলতে নেমে কুপোকাত হয়ে যায় হরহামেশা।

বিকেএসপি’র ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদিন ফাহিম ঘরোয়া ক্রিকেটের পদ্ধতিকেই দুষলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটের সিস্টেমে পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যাটারদের স্পোটিং উইকেটে খেলিয়ে খেলিয়ে আত্মবিশ্বাসী বানাতে হবে। এগুলোতে পরিবর্তন না এলে গোড়াতেই গলদ থেকে যাবে।’

তরুণ ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টি সম্পর্কে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারণা কম পাচ্ছে। এ কারণে তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না কীভাবে ব্যাটিং করতে হবে। সেজন্যই বাংলাদেশ দলে প্রচুর ‘ধরে খেলার’ ব্যাটার দেখা যায়। কুড়ি ওভারের প্রেক্ষাপটে তাদের প্রয়োজন কোথায়? বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে সমালোচনা হজম করতে হয়েছে। এ কারণে বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি। তার জায়গা দখল করে নেওয়া নাঈম শেখ মোটামুটি রান পেলেও ‘ধরে খেলার’ নীতিতে চলছেন। একসময় ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে নাম কুড়ানো সৌম্য-লিটনরা এখন খোলসবন্দি। সবচেয়ে অভিজ্ঞ তিন ক্রিকেটার সাকিব-মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক যেন টি-টোয়েন্টি ভুলেই গেছেন!

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com