যদি হারিয়ে যাই সমুদ্রের জলে
জলিল সরকার
ধরো, যদি আমি কোন এক মাছ রাঙা দুপুরে হারিয়ে যাই অচেনা কোন এক শহরে;
তুমি কী খুঁজবে আমায়?
স্বপ্নের ভেতর দিবসের আলো ফেলে
কিংবা মেঘ পরীর ডানায় চিঠি লিখে কোন এক দিবসের গায়ে হাতে হাত রেখে স্মৃতির পাতায় হাতড়ে বেড়ানো বিকাল,
তোমার দু’চোখের ভাঁজে বৃষ্টিভেজা সবুজ অরণ্যে হেঁটে যাবে গাঙচিলের ডানায় নোঙর ফেলে;
তখন, তোমার দু’ঠোঁটে ভাঁজে লেগে থাকা বসন্তের সুখ আমায় নিয়ে যাবে কোন এক গল্পের দেশে।
ধরো, যদি কোন একরাতে শিশিরের শব্দের ভেতর ফিরে পাই যদি আমার আজন্ম শৈশব ঘুড়ি উড়ানোর ছলে,
তখন দুপুরের বুকে এঁকে দেই তোমার মুখচ্ছবি;
তখন তুমি কী চিনতে পারবে,
তোমার বৃষ্টিভেজা সোঁদা মাটির ঘ্রাণ শুঁকে?
ধরো, হয়তো আমি মহাশূন্যে ভেসে বেড়ানো অসংখ্য তারাদের ভিড়ে হারিয়ে যাই সন্ধ্যারাতে প্রদীপের আলোয় আর নক্ষত্রের বুকে নোঙর তুলে ভেসে ভোসে বৃষ্টির জলে মিলেমিশে হয়ে যাই একাকার
সেদিন তুমি কী চিনবে আমায় বসন্তের অনুরাগে?
ধরো, সমুদ্রের কাছে একটু তৃষ্ণার্তের জল ছুঁয়ে দেই বাউরি ঝড়ে; পৃথিবীর পৃষ্ঠা হতে যদি মুছে যায় সমুদ্র দেখা সেই মাহেন্দ্রক্ষণ
তুমি কী খুব রাগ করবে?
নাকি স্মৃতির পাতা হতে শরতে বিকেল ছুঁয়ে যাবে আলোয় রাঙা সোনালী ভোর!
ধরো, সত্যি একদিন কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ ছুঁয়ে চলে গেছি সেই অদেখা ভুবনে; যেখান হতে কেউ ফেরেনি কোনকালে,
তুমি কী খুব কেঁদে কেটে বুক ভাসাবে তিস্তার জলে।
অথবা, বসন্তের অনুরাগ দু’চোখের পাতা ছুঁয়ে যাবে রূপোলী রাতে হেঁটে হেঁটে তোমার ঠোঁটে প্রজাপতির প্রগাঢ় চুম্বন এঁকে যাবে কোন বৈশাখী রাতে- আমায় মনে করে।
যদি হারিয়ে যাই সমুদ্রের জলে কোন এক স্বর্ণালি বিকেলের রোদ ছুঁয়ে মেঠো পথে-
সেদিন, সেদিন না হয় আমার কবিতার খাতায় লিখে যাবো আমার গোপন অভিসার,-শুধু তোমার জন্যেই।