আফগানিস্তান থেকে আকস্মিকভাবে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করার পর আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর দ্রুত পতন ঘটে এবং এ প্রেক্ষাপটে কয়েকশ কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম তালেবানের হাতে পড়েছে। এসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে এ-২৯ সুপার টুকানো বিমান রয়েছে।
আফগানিস্তানের ওপর তালেবানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার পর তাদের হাতে বহুল ব্যবহৃত একে-৪৭ রাইফেলের পরিবর্তে মার্কিন নির্মিত এম-৪ কারবাইন এবং এম-১৬ রাইফেল দেখা গেছে। এছাড়া, তালেবান যোদ্ধাদেরকে মার্কিন হামভি ও মাইন প্রতিরোধক অ্যাম্বুশ প্রটেক্টেড গাড়িতে দেখা গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, তালেবানের হাতে মার্কিন অস্ত্র থাকার অর্থ হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিকভাবে তারা বিজয়ী।
আমেরিকা দাবি করেছে, তারা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসজ্জিত করতে গত ২০ বছরে আট হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে। কিন্তু তাদের এই প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রপাতি তালেবানের হামলার ঠেকাতে পারে নি বরং মার্কিন সেনাদের কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য তালেবানে যোগ দিয়েছে।
মার্কিন গভর্নমেন্ট একাউন্টিবিলিটি অফিসের ২০১৭ সালের তথ্য অনুসারে- আমেরিকা আফগানিস্তানকে ৭৫,৮৯৮টি গাড়ি; ৫,৯৯,৬৯০টি অস্ত্র; ১,৬২,৬৪৩টি যোগাযোগের সরঞ্জাম, ২০৮টি বিমান ও হেলিকপ্টার এবং ১৬,১৯১টি গোয়েন্দা ও নজরদারি সরঞ্জাম দিয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম দেয়া হয়।
এছাড়া, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানকে ৭,০৩৫টি মেশিনগান; ৪,৭০২টি হামভি গাড়ি; ২০,০৪০টি হ্যান্ড গ্রেনেড; ২,৫২০টি বোমা ও ১,৩৯৪টি গ্রেনেড লাঞ্চার দিয়েছে ওয়াশিংটন।
আফগানিস্তানকে দেয়া বিমান ও হেলিকপ্টারের ৪৬টি এখন উজবেকিস্তানে রয়েছে। তালেবানের হাতে রাজধানী কাবুলের পতনের পর এসব এয়ারক্র্যাফট ব্যবহার করে আফগানিস্তানের প্রায় ৫০০ সেনা উজবেকিস্তানে পালিয়ে যায়। বাকিগুলো তালেবানের হাতে রয়েছে।