তালেবানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু বাংলাদেশী আফগানিস্তান যাওয়ার জন্য ‘হিজরতে’ বেরিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম।
শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তথ্য দেন তিনি।
আগামীকাল ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উদযাপন উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখতে যান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সমগ্র পৃথিবী এখন সাইবার ওয়ার্ল্ডে বন্দি। জঙ্গিরাও একই মিডিয়ায় তাদের রিক্রুট এবং উদ্বুদ্ধ করছে। সম্প্রতি তালেবানরা আফগানিস্তানে যুদ্ধে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। আর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু মানুষ হিজরতে (ঘর ছেড়ে) বেরিয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু গ্রেফতার হয়েছে ভারতে, আর কিছু পায়ে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
তবে সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা থেমে নেই এটা বলা যায়। আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটে।’
শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ‘গত পরশু জঙ্গি সংগঠনের একজনকে গ্রেফতার করেছি। তিনি বোমা বিশেষজ্ঞ। অনলাইনে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন। নারায়ণগঞ্জে শক্তিশালী বোমা উদ্ধার হয়েছে, সেটাও তার সরাসরি তত্ত্বাবধানে তৈরি করা। এ মাসে উল্লেখ্যযোগ্যসংখ্যক জঙ্গি বা নাশকতাকারী গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থাৎ তারা যে থেমে নেই, সেটা বলা যায়। কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে বাংলাদেশে আর একটি ঘটনাও না ঘটে।
ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, ‘যারা জঙ্গি হামলাগুলো করে, এখন যারা হামলা করার চেষ্টা করছে, তাদের প্রধান কাজই হলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসা। অর্থাৎ প্রতিটা ঘটনা ঘটিয়েই তাদের আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় আসতে হয়। এ ক্ষেত্রে ১৫ আগস্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাদের ক্ষেত্রে। ১৫ আগস্টের ভেন্যুর আশপাশে না হোক, এর থেকে দুই কিলোমিটার দূরেও যদি বোমা ফাটাতে পারে, তাতেও আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ হবে। এদিক বিবেচনা করে তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু যে গ্রুপ ডেভেলপ করে উঠছিল, সেই পুরো ট্র্যাক ধরা পড়ে গেছে। আমাদের আশঙ্কা আছে, কিন্তু সর্বোচ্চ মেধা ও চেষ্টা দিয়ে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেটার জন্য তৎপর আছি।
১৫ আগস্টের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ধানমন্ডি ৩২ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা প্রত্যেককে হ্যান্ড মেটাল ডিটেকটর দিয়ে তল্লাশি করে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তল্লাশি, ব্লক রেইড, চেকপোস্টের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সুইপিং করা হয়েছে ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট দিয়ে। ধানমন্ডি ৩২ ও বনানী কবরস্থান কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানস্থল ও তার আশপাশের এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থাকবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এরপর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রবেশ করবেন। এটা যেহেতু আবেগের জায়গা তাই, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।