ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী সাঈদ ইব্রাহিম রাইসিকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহন করবেন তিনি। ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে জানায়, তেহরানের স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ইরানের সংসদ ভবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
রাইসির শপথগ্রহণে থাকছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী সাঈদ ইব্রাহিম রাইসিকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার শপথ নিচ্ছেন তিনি। ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে জানায়, তেহরানের স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ইরানের সংসদ ভবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদলও অংশগ্রহণ করছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ইরানের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মঙ্গলবার রাতে তেহরানের উদ্দেশ্য রওনা হন। বুধবার রাতে তারা তেহরানে পৌঁছেছেন।
তিন সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এই প্রথমবারের মতো ইরানের কোনো নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। ইরানের নতুন নেতৃত্বের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বার্তা নিয়ে গেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার তেহরানের পার্লামেন্টে বর্ণাঢ্য এক আয়োজনে শপথ নেবেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এতে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ পঞ্চাশের অধিক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে অংশ নিচ্ছেন। ইরানের সংসদ মজলিসে শুরায়ে ইসলামির মুখপাত্র সাইয়্যেদ নিজামুদ্দিন মুসাভি জানিয়েছেন, বিশ্বের ৭৩টি দেশের ১১৫ জন রাষ্ট্রীয় অতিথি প্রেসিডেন্ট রাইসির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
ইরানী প্রশাসন ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ইরানের রাজধানী তেহরানে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ইব্রাহিম রাইসিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনুমোদন দেন খামেনী।
গত ১৮ জুন অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিচার বিভাগের সাবেক প্রধান ইব্রাহিম রাইসি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেন। দায়িত্বগ্রহণের পরে প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয়েছে। দুই মেয়াদে আট বছর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন হাসান রুহানি।
সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সাঈদ ইব্রাহিম রাইসির পরিচয়:
সাঈদ ইব্রাহিম রাইসি ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইরানের মাসাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ২০ বছর বয়সেই কারাজ শহরের প্রধান প্রসিকিউটরের দায়িত্ব নেন তিনি। এরপর থেকেই ইরানের বিচার বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাইসি। বিচারব্যবস্থার ওপর অর্জন করেছেন উচ্চতর ডিগ্রি।
রাজনৈতিকভাবে কট্টর রক্ষণশীল নেতা হিসেবে পরিচিত তিনি। ১৯৭৯ সালে ইরানে সংগঠিত ইসলামি বিপ্লবের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ছিল তার। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সহযোগী হিসেবে পরিচিতি পান তিনি।
১০ বছর ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর, ২০১৪ সালে ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রাইসি।এরপর ২০১৬ সালের এপ্রিলে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে পার্লামেন্টের বিশেষজ্ঞ প্যানেলে যোগদান করেন।
এরপর ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিলেও মধ্যপন্থি নেতা হাসান রুহানির কাছে পরাজিত হন তিনি। তবে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সমর্থন নিয়ে সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে বিপুল জয় পান ৬১ বছর বয়সী সাঈদ ইব্রাহিম রাইসি।