হঠাৎ করেই রাতের আকাশে উজ্জ্বল আলো ছড়িয়ে কোনও একটি বস্তুকে ছুটতে দেখেন নরওয়েবাসী। তাঁরা এ দৃশ্যে খানিকটা অবাকই হয়েছেন। কী হয়েছিল?
জানা গিয়েছে, দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রাতের আকাশ হঠাৎই আলোকিত হয়ে উঠেছিল বড় একটি উল্কার কারণে। এ ধরনের উল্কাপাতের (unusually large meteor) ঘটনা বিরল। ঘটনার বেশ কিছু ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সব ভিডিয়োতেই আলোর ঝলকানি দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আলোর ঝলকানির পাশাপাশি বিকট শব্দও শোনেন।
নরওয়ে পুলিশ জানায়, আলোর ঝলকানির সময়ে অনেক জরুরি কল পেতে শুরু করে তারা। ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ওটি উল্কাপাত নিশ্চিত হওয়ার পরে উল্কাপিণ্ডের খোঁজে নেমে পড়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞই। তাঁদের ধারণা, রাজধানী অসলোর (Oslo) কাছেই কোনো বনের মধ্যে আঘাত হেনেছে উল্কাপিণ্ডটি। সাধারণত এ ধরনের উল্কাপিণ্ড মহাকাশ থেকে দ্রুতগতিতে ছুটে এসে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
The Norwegian Meteor network বলছে, ওই আগুনের গোলকটি রাত একটা নাগাদ আকাশে আবির্ভূত হয়। কমপক্ষে পাঁচ সেকেন্ড দৃশ্যমান ছিল সেটি। সেকেন্ডে ১৬.৩ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন (ঘণ্টায় ৩৬ হাজার ৫০০ মাইল) উল্কাপিণ্ডটিকে দক্ষিণ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার বিশাল এলাকা থেকে দেখা গেছে।
নরওয়ের জ্যোতির্বিদ ভেগার্ড রেক্কা বলেন, ওই সময় তাঁর স্ত্রী জেগেই ছিলেন। তিনি বাতাসে কাঁপনের শব্দ শুনতে পান। এরপর বড় এক বিস্ফোরণের শব্দও শোনেন।
উল্কাপিণ্ডটি যেখানে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে একদল বিশেষজ্ঞ পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অসলো থেকে ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে ফিনেমারকা নামের বনভূমি এলাকায় উল্কাপিণ্ডটি পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, উল্কাপিণ্ডটির ওজন ১০ কেজি হতে পারে।
The Norwegian Meteor network-র কর্মকর্তা Morten Bilet উল্কাপাতের এ ঘটনাকে বিপজ্জনক না বলে ‘অদ্ভূতুড়ে’ বলে আখ্যায়িত করেন।
এ ধরনের উল্কাপাতের ঘটনা সাধারণত বিরল। এর আগে ২০১৩ সালে রাশিয়ার উরাল পর্বতে একটি উল্কাপাতের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ১ হাজার ৬০০ মানুষ আহত হয়েছিলেন।