মুসলিম প্রধান অধ্যুষিত এ দ্বীপটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কোনো ঘটনা এখনও ঘটেনি। ভারতের মুসলিম প্রধান এই দ্বীপপুঞ্জ কীভাবে এতদিন করোনামুক্ত থাকতে পারল? খবর বিবিসি বাংলা।
এ সফলতা লাভের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘ভারতের অন্যান্য অঞ্চল এবং বিশ্বের অন্যসব দেশের তুলনায় অনেক আগে থেকেই যাতায়াতসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় কড়াকড়ি আরোপ করেছিল লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসন লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসন সেখানে ফের স্কুল খোলার জন্যও কেন্দ্রের অনুমতি চেয়েছে।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মহম্মদ ফয়জল বলেছেন, ‘যখন জানুয়ারির শেষে কেরালায় প্রথম কোভিড রোগীর সন্ধান মেলে, আমরা প্রথমেই এ দ্বীপে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের আসা বন্ধ করে দিই। এমনকি যারা এন্ট্রি পারমিট নিয়ে এখানে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে আসেন তাদের জন্যও লাক্ষাদ্বীপের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়।দ্বিতীয়ত, পুলিশ এখানে কারফিউ বা ১৪৪ ধারাও খুব কঠোরভাবে বলবৎ করেছে, লোকজনও অযথা বাড়ির বাইরে বের হয়নি। যাদের জরুরি চিকিৎসা বা বিশেষ প্রয়োজনে মূল ভূখন্ডে যেতে হয়েছে তাদের জন্য কোচিতে আমরা দুটো কোয়ারেন্টিন সেন্টারও চালু করেছি- সেখান সাতদিন কোয়ারেন্টিনে থেকে টেস্টে নেগেটিভ হলে তবেই তারা ফেরত আসার অনুমতি পেয়েছেন।’আর লাক্ষাদ্বীপের যেসব (প্রবাসী) স্থানীয়রা দুবাই বা আরব দেশগুলো থেকে ফিরে এসেছেন তাদের জন্যও কোচিতে দুসপ্তাহ এবং দ্বীপে ফিরেও আরও দুসপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
জনপ্রতিনিধি মহম্মদ ফয়জল মুসলিম প্রধান অধ্যুষিত লাক্ষাদ্বীপপুঞ্জের ৩৬টি দ্বীপের মধ্যে সব দ্বীপে লোকজন বসবাস করে না। মাত্র ১০টি দ্বীপে লোকজন বসবাস করে থাকে। এ দ্বীপে জনসংখ্যা কম থাকা এবং ভিড় না থাকাও দ্বীপটিকে করোনা আক্রান্তের হাত থেকে মুক্ত রেখেছে। তাছাড়া অন্যান্য দেশে যখন কোয়ারেন্টিনে থাকার খরচ নিজেদের বহন করতে হচ্ছে, সেখানে লাক্ষাদ্বীপের ক্ষেত্রে সরকারই সেটা দিচ্ছে- আর লোকজনও তাই থাকতে কোনও আপত্তি করছে না।
লাক্ষাদ্বীপের সঙ্গে বাকি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা হলো- কোচি থেকে বিমান পরিষেবা আর মোট সাতটি যাত্রীবাহী জাহাজের সার্ভিস। করোনাভাইরাস সনাক্ত হওয়ার শুরু দিকে এ যোগাযোগে বিপুল কড়াকাড়ি আরোপ করার ফলেই মুসলিম প্রধান অধ্যুষিত লাক্ষাদ্বীপ এখনও করোনাভাইরাসমুক্ত।