সম্প্রতি গুপ্ত হত্যার শিকার হন ইরানের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী মহসিন ফখরিজাদেহ। তিনি পরিচিত ছিলেন ‘ইরানের বোমার জনক’ হিসেবে। স্বাভাবিকভাবেই এই বিজ্ঞানীর মৃত্যু নিয়ে উত্তাল বিশ্ব। ইরান বলছে, ইসরায়েইলই হত্যা করেছে ফখরিজাদেহকে। আর এ ঘটনার প্রতিশোধ নেয়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে ইরান।প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতেও ‘রহস্যজনক’ হত্যার শিকার হয়েছেন একাধিক পরমাণু বিজ্ঞানী। দেশটির এমন অনেক পরমাণু বিজ্ঞানীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর দীর্ঘদিন পরেও রহস্য জানা যায় না।
এখন পর্যন্ত কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যুর ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বা ‘অজ্ঞাত কারণ’ দেখিয়েই মামলার ইতি টানা হয়েছে।এটা তো সত্যি যে বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই ভারতের এই উন্নতি যথেষ্ট হিংসার কারণ। তাই ষড়যন্ত্রের প্রশ্নও কিন্তু একেবারে এড়িয়ে দেওয়া যায় না। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। যার পরিপ্রেক্ষিতে বোম্বে হাইকোর্টে এ বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলাও করা হয়। এসব বিজ্ঞানীর মৃত্যুর ঘটনা পুনরায় তদন্তের জন্য একটি বিশেষ টিম তৈরিরও আবেদন জানানো হয়।
হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা: ১৯৬৬ সালে মারা যান ভারতে পরমাণু বিজ্ঞানের জনক হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে করে দেশে ফিরছিলেন তিনি। বিমানটির কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না বলেই যাত্রা শুরুর আগে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল। এমনকি, নিয়মানুযায়ী মাঝপথেও বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি নেই বলে রিপোর্ট করা হয়। কিন্তু তার ঠিক ৫ মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। হোমি ভাবাসহ মারা যান বিমানটিতে থাকা ১১০ জন ভারতীয় নাগরিক। এই ঘটনা নিয়ে ভারতীয় সরকার বিস্তারিত তদন্ত করেনি।
লোকনাথন মহালিঙ্গম: ২০০৩ সালে ৪৮ বছর বয়সে মারা যান আরেক পরমাণু বিজ্ঞানী লোকনাথন মহালিঙ্গম। নিখোঁজের পাঁচদিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় নদী থেকে।
উমং সিং ও পার্থ প্রতিম বাগ: ২০০৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থিত ভাভা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে আগুন লেগে মৃত্যু হয় দুই তরুণ বিজ্ঞানী উমং সিং ও পার্থ প্রতিম বাগের। এই ঘটনাকেও ‘রহস্যজনক’ আখ্যা দিয়েছিল তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ।
মহাদেবন পদ্মনাভন আইয়ার: ২০১০ সালে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের বাড়ি থেকে মহাদেবনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনিও ভাভা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। এ ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেয়াল ও মেঝেতে কয়েক ফোঁটা রক্তের দাগ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি।
উমা রাও: ২০১১ সালে ভাভা রিসার্চ সেন্টারে আরেক বিজ্ঞানী উমা রাওয়ের মৃত্যু হয়। ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
কেকে জোশ ও আভিশ শিভাম: ভারতে ব্যালিস্টিক সাবমেরিন ‘আইএনএস আরিহন্তের’ জন্য কাজ করছিলেন এই দুই বিজ্ঞানী। তাদের মরদেহ পাওয়া যায় রেললাইনে। বিষপ্রয়োগে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।সুত্র:জা:নি