আমিরাত ও তুরস্কের কয়েক মাসের গোপনীয় বৈঠক, উচ্চ-পর্যায়ের ফোন কল ও বিভিন্ন প্রতীকী আভাসের পর বুধবার (১৮ আগস্ট) তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।-খবর মিডল ইস্ট আইয়ের
গেল পাঁচ বছর ধরে তুরস্ক প্রকাশ্যেই অভিযোগ করে আসছিল যে এরদোয়ানবিরোধী সামরিক অভ্যুত্থানে অর্থায়ন করেছে আমিরাত। এছাড়া লিবিয়ায় তুরস্কের স্বার্থ আগ্রাসীভাবে খর্ব করার দায়ও উপসাগরীয় দেশটির ওপর চাপিয়েছে আংকারা।
মধ্যপ্রাচ্যে বেশ কিছু ইস্যু নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে আমিরাতের দ্বন্দ্ব রয়েছে। যেমন, আরব বসন্তের পক্ষে তুরস্কের অবস্থান, নতুন গণতন্ত্রে তুরস্কের সমর্থন এবং মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড নেতৃত্বাধীন সরকারকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল আমিরাত। এসব সত্ত্বেও বুধবারের বৈঠককে দুদেশের মধ্যে নতুন যুগের সূচনা বলে আখ্যায়িত করেছেন তুরস্কের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যকার মতভেদ ভুলে তাদের ভিন্ন এক পথচলা শুরু হয়েছে।
এই পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছে তুরস্ক। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, স্পর্শকাতর পররাষ্ট্রনীতি ও দেশটির অস্পষ্ট ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে তাহউন বিন জায়েদ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের তিনি সৎভাই ও আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের আপন ভাই।
বুধবার এরদোয়ান বলেন, আসছে দিনগুলোতে আমরা মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছি। দুদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে আলোচনার পর সেই বৈঠকের আয়োজন করা হবে। এভাবে আঞ্চলিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবো বলে প্রত্যাশা করছি। কারণ আমাদের জনগণ একই ধর্ম ও সংস্কৃতির অনুসারী। পরস্পরের মধ্য আলোচনায় বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ আমাদের রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের অধীন আবুধাবি অনেকটা বিচ্ছিন্ন বলে মনে করেন তুরস্কের কর্মকর্তারা। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানকে সবচেয়ে বড় শত্রু বলে মনে করে আমিরাত। তুরস্কের আরেক কর্মকর্তা বলেন, তেহরানের বিরুদ্ধে তারা একা দাঁড়াতে পারবে না। এ অঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে আমিরাত অনেকটা বিচলিত বোধ করছে।
এদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে আমিরাতের সম্পর্কেও কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কারণ সৌদিরা এখন বিদেশি বিনিয়োগ টানতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে, তারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণা করেছে। করোনা মহামারি বাড়তে থাকায় গত মাসে আামিরাতের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সৌদি। তুরস্কের ভাষায়, সৌদির এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।