করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে জনস্বার্থে মামলার নামে জনগণের মনে অযথা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।রোববার (০২ মে) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
রিটকারীর উদ্দেশে আদালত বলেছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে বিভিন্ন মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন, পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা ও প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকাদানের সুযোগ করে দিতে এক সপ্তাহ আগে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন।
এ সময়ের মধ্যে এসবের ব্যবস্থা না করায় রিট দাখিল করেছেন। করোনা মহামারি পরিস্থিতি কোন দিকে যেতে পারে বা না পারে সেটা তো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনুমান করতে পারেনি।
আর যেখানে প্রতিনিয়ত করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে একটি রিট করে একগুচ্ছ নির্দেশনা চাইলেন? হঠাৎ করেই কি এগুলোর বাস্তবায়ন সম্ভব? কিন্তু এসব বিষয়ে আমরা সরকারের সদিচ্ছার কোনো ঘাটতি বা উদ্যোগের অভাব দেখছি না।
সরকার ইতিমধ্যে শিল্পকারখানায় অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়া টিকা আনতে আরও দুটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। একটু অপেক্ষা করেন। সব কিছু নিয়ে জনস্বার্থে রিট করে করোনা মহামারির মতো পরিস্থিতিতে দেশে প্যানিক ক্রিয়েট করার চেষ্টা করবেন না বলেও উল্লেখ করেছেন আদালত।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদী জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও করোনার টিকা কেনার নির্দেশনা চেয়ে গত ২৬ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার।
রিটকারীদের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে আপনারা জনস্বার্থের মামলা নিয়ে আসতেছেন কোর্টে। কিন্তু এছাড়াও জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টিতে আপনাদের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, টিকার এক বা দুই ডোজ নেওয়ার পরও আপনি ঝুঁকিমুক্ত নন, মাস্ক আপনাকেই পরতেই হবে। তাহলে সুরক্ষা দেবে। টিভিতে দেখছিলাম ঢাকা শহরে প্রত্যকটা মার্কেটে লোকসমাগম বাড়ছে এবং কিভাবে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে আপনারা জনগণকে সচেতন করেন।
আদালত বলেন, এর আগে আইসিইউ নিয়ে কথা উঠছে। সরকার আইসিইউ বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। মনে রাখতে হবে, একটা আইসিইউ চালাতে গেলে যে ধরনের ডাক্তার, টেকনিশিয়ান, নার্স প্রয়োজন হয়, সে ধরনের জনবলের অভাব আছে। এ ধরনের জনবল রাতারাতি বা সাত দিনের ট্রেনিং দিয়ে তৈরি করা যায় না।
পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, সরকারের এসব বিষয়ে কোনো সমন্বিত পরিকল্পনা আছে কিনা খোঁজ নিন। এরপরই রিট আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয় হাইকোর্ট।