কিশোরগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে মো. খায়রুল ইসলাম (২৫) নামে জেলা কারাগারের এক কারারক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে কটিয়াদী উপজেলার মণ্ডলভোগ এলাকা থেকে বাট্টা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা রুজুর প্রস্তুতি চলছিল। খায়রুল ইসলাম টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার বাইপাইল ছোট্ট গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।
পুলিশ জানায়, দেড় বছর আগে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ুয়া জেলার কটিয়াদী উপজেলার পূর্ব মণ্ডল ভোগ গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে রুমা আক্তারকে বিয়ে করেন কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি কারাগার কোয়ার্টারে থাকতেন।
পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই খাইরুল ইসলাম যৌতুকের জন্য রুমা ও তার আত্মীয়দের চাপ দিত। এ পরিস্থিতিতে রুমার পরিবার খাইরুল ইসলামের হাতে নগদ ৩ লাখ টাকা এবং ৩ ভরি স্বর্ণালংকার তুলে দেন। এরপরও যৌতুকের টাকার জন্য রুমার ওপর চালাত অমানুষিক নির্যাতন।
রুমার পরিবারের অভিযোগ, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে রুমাকে মারধর করে খায়রুল। খবর পেয়ে রাতেই রুমার মা ছিনু বেগম কিশোরগঞ্জ এসে তাকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতাল নিয়ে যান। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সর্বশেষ বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য রুমা আক্তারের মরদেহ কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, কটিয়াদী মডেল থানার বাট্টা তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ বুধবার বিকেলে পশ্চিম মণ্ডল ভোগ এলাকা থেকে আটক করা হয় কারারক্ষী খাইরুল ইসলামকে। এ ঘটনায় রুমা আক্তারের মা বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার বজলুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খাইরুল ইসলাম অসুস্থতার জন্য চিকিৎসাজনিত কারণে ছুটিতে ছিল। তবে ইতিমধ্যেই স্ত্রী হত্যার অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করেছে বলে খবর পেয়েছি। তার গ্রেফতার ও মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..