করোনা মহামারির পরিস্থির মাঝেও কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার মনকারা হিন্দুপাড়ায় প্রতিদিন জমজমাট জুয়া খেলার আসর বসে।বিকেল থেকে শুরু হয়ে সারারাত জমে থাকে আসর। আসরগুলোতে তাস, তিনকার্ড, মোবাইল,ডিব্বা, লুডু, ঘরসহ বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে পরিচালিত হয় পুরো জুয়ার আসর। আসরগুলোতে গোপনীয়তা রক্ষা করে ক্যাসিনো খেলার খবরও পাওয়া যায়। হাতের নাগালে এসব জুয়ার আসর থাকায় জুয়ার নেশায় পুরো এলাকাসহ আশপাশের অনেকে সর্বস্ব খুইয়ে ফেলেছে শত শত মানুষ।একটি অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার দাউদকান্দি, গৌরীপুর, তিতাস, হোমনা, বরুড়া ও সদর উপজেলা, শহরসহ শতাধিক গ্রামে এসব জুয়ার আসর বসে। মধ্য ও স্বল্প আয়ের পরিবারের লোকজন এসব আসরে আসেন। উপার্জনের যাবতীয় টাকা ছাড়াও অনেকেই সংসারের দ্রব্যসামগ্রী, স্বর্ণলংকার বন্ধক রেখে ও জায়গা জমি বিক্রি করে জুয়া খেলে থাকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৩ সেরা জুয়াড়ি আলী, রুহুল আমিন মেম্বার, ওদুদের নেতৃত্বে জমজমাট জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরুড়া উপজেলার মনকারা হিন্দুপাড়ায় প্রতিদিন দুপুরের পর শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত জুয়ার আসর চালানো হয়। এলাকাবাসী জানান, রোজ দুপুরের পর হতে ওই স্থানে জুয়াড়িরা মোটরসাইকেলে চড়ে, কেউ সিএনজি নিয়ে, কেউ অটো নিয়ে আসতে থাকে। কিছু জুয়াড়ি সন্ধ্যার পর চলে যায়।কিছু জুয়াড়ি সারা রাত খেলায় মগ্ন থাকে। জুয়ার আসরকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় প্রতিদিন মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল ইয়াবাসহ অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্যের বাজার বসানো হচ্ছে। উঠতি বয়সের শত শত যুবক এখানে নিয়মিত ভিড় করে। কেউ নেশা জাতীয় দ্রব্য বিক্রি করে, আবার কেউ তা ক্রয় করে বিভিন স্থানে নিয়ে যায়। অনেকে মাদক সেবনের কাজ শেষ করে জুয়ার আসরে মগ্ন হয়।
করোনার এই সুযোগে একাধিক সংঘবদ্ধ জুয়ারিরা গ্রামের ফাঁকা মাঠ, পরিত্যক্ত ঘর, গাছের বাগান, বাঁশঝাড়, ঝোপ-জঙ্গলে পরিচালনা করছেন এসব জুয়া খেলা।করোনার সংক্রমণরোধে সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ম মানতে এলাকার হাটবাজার, দোকানপাট, চা স্টলসহ সকল প্রকার আড্ডা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সব ধরনের বিনোদনও বন্ধ রয়েছে। লোকজন অনেকটাই ঘরমুখী। কর্মহীন মানুষগুলো বাড়িতে বসে অলস সময় পার করছেন। গ্রামের অসাধু ব্যক্তি ও কিছু দালাল এই অলস সময়কে কাজে লাগাচ্ছেন জুয়া খেলে। কোনভাবেই জুয়ার আসরে স্বাস্থ্যবিধিও সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব মানা হচ্ছে না।
স্থানীয় লোকজন জুয়ার বোর্ডটি বন্ধ করার জন্য কুমিল্লা পুলিশ সুপার ও জেলার উর্ধত্বন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।