প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা মুক্ত এ বাংলাদেশে সংগ্রামী মাটি চট্টগ্রামে জন্ম দিয়েছে লাখো সৈনিকের। আমাদের মহান নেতা জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিল এ চট্টগ্রাম থেকে। এজন্য বীর চট্টলার মানুষ কে আমরা আলাদা চোখে দেখি।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি কঠিন ও অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছি। হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু তার প্রেত্মারা এখনও আছে। তারা এখনও ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশে আবার তাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠার। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র আমাদের তরুণদের সামনে টিকে থাকতে পারবেনা। কিন্তু দুভার্গ্য হচ্ছে আমরা যাদের দায়িত্ব দিয়েছি একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তারা সঠিকভাবে কাজটি এখনও করতে পারছে না। এজন্য মাঝে মাঝে এরকম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আজকে এখানে যখন সভা হচ্ছে তখন আরেকটি সভা হচ্ছে এখানের নিউমার্কেটে, ঢাকায়ও হচ্ছে। দাবিটা কি? দাবি হল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা এ মাঠে আছি তারা নয়, আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চাই না। কারণ এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এদেশের মানুষকে নির্যাতন করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে বাকশাল করেছে। সব পত্রিকা বন্ধ করেছিল। শুধুমাত্র ৪টি পত্রিকা খোলা রেখেছিল। অর্থনীতি বন্ধ করে দিছিল। সেই অর্থনীতিকে জিয়াউর রহমান সাহেব এসে খুলে দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এখন সংস্কার সংস্কারের কথা বলেন? আরে প্রথম সংস্কার করেন জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র আনেন তিনি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন, গার্মেন্টস খাত এবং বিদেশে মানবসম্পদ পাঠানো সব কিছুর শুরু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান করেছিলেন। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ৯ বছর মাঠেঘাটে ঘুরে ঘুরে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এরশাদকে পরাজিত করছিল। তিনি সংসদীয় গনতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন। গণতন্ত্র ব্যবস্থা ঠিক রাখতে কেয়ারটেকার সরকারও করেছিলেন খালেদা জিয়া। কিছু কিছু মানুষ সব ভুলে যায়। তারা মনে করে যে, বাইরে থেকে লেখাপড়া শিখে এসে আমাদের সামনে কিছু সুন্দর সুন্দর মুখোরোচক কথা বললে জাতি বোধহয় সবকিছু ভুলে যাবে।
তাদেরকে বলব, আজকে এ সমাবেশ দেখেন। যদি সমাবেশ দেখে বুঝতে পারেন তাহলে জাতি উপকৃত হবেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। তরুণরা চাকরি, ব্যবসা ও কর্মসংস্থান চায়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চায়। কৃষক ভাইয়ের ফসলের মূল্য চায়। একটা দেশ চায় যেখানে সবাই কথা বলতে পারবে। যেটা সহনশীলতার মধ্য ঐক্যের মধ্য দিয়ে হবে। তারেক রহমানের এ তারুণ্যের সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য, এ তরুণরাই জেগে উঠেছে। আপনারাই পরাজিত করেছেন ফ্যাসিস্টকে। সেই তরুণদের বলছি আপনারাই জেগে উঠুন। আপনার অধিকার আপনারা কেড়ে নিন। মাথা ঠান্ড রেখে সজাগ থেকে সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কোনো কিছু করতে দিব না। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা আপোষহীন। যে কারণে তারেক রহমান বলেছিলেন, সবার আগে বাংলাদেশ। এর আগে বলেছিল ফয়সালা হবেন-রাজপথে। টেক ব্যাক-বাংলাদেশ। আর এবার বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ।
তরুণদের উদ্দেশ্যে বলছি, আমরা দেখতে চাই সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। যেখানে মানুষ মানুষকে ভালবাসবে। বাংলাদেশের মাথাটা এবং পতাকা পত পত করে উড়বে। মাথা উঁচু করে থাকবে। আমাদের সমাবেশ মঞ্চে তামিম আছে। সে চট্টগ্রামের ছেলে। সে অসংখ্য তামিম সে তৈরি করতে বলেছে। সবাই সেদিকে যাবেন। চট্টগ্রামকে স্যালুট। শহীদ ওয়াসিমকে শ্রদ্ধা জানাই। তবে সরকার পাঠ্যপুস্তকে শহীদ ওয়াসিমের নাম দেয়নি। আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার সংশোধন করে ওয়াসিমের নাম সংযুক্ত করবেন।
ম্যাডাম যেদিন ফিরে আসেন সেদিন লক্ষ মানুষ রাজপথে ছিল। আজকে সমাবেশ লক্ষ মানুষের সমাবেশ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দয়াকরে মতবাদকে সঠিকপথে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সঠিক পথে আনতে। শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।