1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন

মাইন্ড এইডকে লাইসেন্স দেয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ! নাম প‌রিবর্তন ক‌রে প্রতারণা

নিজস্ব প্রতি‌বেদক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২০
  • ৬৬৯ বার পঠিত

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে ‘মাইন্ড এইড মানসিক ও মাদকাসক্তি নিরাময় হাসপাতাল’ নামে অনুমোদন নেয় মাইন্ড এইড। পরে সেটির নাম পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে মাইন্ড এইড ও মাইন্ড কেয়ার ইনস্টিটিউট নাম দেওয়া হয়। সেখানে মানসিক রোগীদের চিকিৎসা করা হয় বলে প্রচার চালিয়ে রোগীদের ভর্তি করা হতো। এমনকি সাইনবোর্ডেও তারা বেআইনিভাবে লাইসেন্সের নাম পরিবর্তন করে অন্য নাম ব্যবহার করেছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের চোখের সামনেই এসব অনিয়ম করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানটিকে ‘মাইন্ড এইড মানসিক ও মাদকাসক্তি নিরাময় হাসপাতাল’ নামে লাইসেন্স প্রদান করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। লাইসেন্স নম্বর ০৩/২০১৯-২০২০। এই নামে লাইসেন্স নিলেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, প্রচারণায় কোথাও এই নাম ব্যবহার করেনি। তারা লাইসেন্সের নাম পরিবর্তন করে নাম দিয়েছে ‘মাইন্ড এইড ও মাইন্ড কেয়ার ইনস্টিটিউট।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসনের লাইসেন্স দেওয়া হয়। এই বিভাগের পরিচালক মু. নুরুজ্জামান শরীফ  বলেন, একটি নিরাময় কেন্দ্র যে নামে লাইসেন্স নেবে, সেই নামেই তার সাইনবোর্ডসহ সকল কার্যক্রম চালাবে। নাম পরিবর্তন করতে পারবে না। নাম পরিবর্তন করা বেআইনি। প্রতিমাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শকরা তার নির্ধারিত এলাকার নিরাময় বা পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। মাইন্ড এইডও নিয়মিত পরিদর্শন করা হতো বলে দাবি করেছেন মু. নুরুজ্জামান শরীফ। তাহলে এমন জালিয়াতি তাদের চোখে পড়লো না কেন—জানতে চাইলে তিনি কোনও উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, এটাতো আমাদের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা দেখেন।

নিরাময় কেন্দ্রের নামের সঙ্গে হাসপাতাল শব্দ থাকলে সেটির অনুমোদন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাদকাসক্তদের হাসপাতাল। সেখানে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাতে কোনও সমস্যা নেই। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের নামের সঙ্গে এভাবে হাসপাতাল জুড়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার ঘটনা অ‌নেক বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।

এই প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে এমন নির্যাতন কক্ষ রয়েছে তাও জানতেন না মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। নারী ও পুরুষকে আটকে রাখার জন্য বিশেষ ধরনের যে কক্ষ বানানো হয়েছে,  মাদকসেবীদের এমন কক্ষে রাখার কোনও নিয়ম নেই বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপন গত ৯ নভেম্বর সকালে এই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে গিয়ে কর্মচারীদের মারধরে নিহত হন। এ ঘটনায় আদাবর থানায় একটি হত‌্যা মামলা হয়েছে। হাসপাতালের মালিকসহ ১১ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিহত আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল করিম বলেন, আমরা আমার ভাইকে নিয়ে প্রথমে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যাই। কিন্তু সেখানের পরিবেশ ও করোনার কথা ভেবে ওই এলাকায় খুঁজতে খুঁজতে মাইন্ড এইড হাসপাতালের ঠিকানা পাই। সেখানে গিয়ে দেখলাম পরিবেশ সুন্দর। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের নামি চিকিৎসকরাও বসেন। তাই সেখানে ভর্তি করাতে আগ্রহী হই ভাই যাতে আরামে থাকে। কিন্তু আমাদের এতবড় সর্বনাশ হবে কখনও ভাবিনি।

এদিকে বুধবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে দুই আসামিকে নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো বিষয়টি শুনেছেন। আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিদুজ্জামান জানান, মামলার তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে ঘটনার বিষয়ে রিমান্ডে থাকা আসামিরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তারা বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন, সেগুলো যাচাই-বাছাই করার পর বিস্তা‌রিত তথ‌্য জানানোর কথা ব‌লেন তি‌নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com