রেমিট্যান্সযোদ্ধা প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তা প্রচেষ্টা প্রসারিত করার প্রয়াসে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে চালু করা হয়েছে ’প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক’। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার সহায়তা ডেস্কগুলোর কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকিসহ প্রবাসীদের সব ধরণের পুলিশী সহায়তা দিবে এই ডেস্ক।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) নগরীর খুলশীতে রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে প্রবাসী সিআইপি ও বাংলাদেশ কমিউনিটি সংগঠকদের নিয়ে ’প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক’ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা বিপিএম (বার), পিপিএম ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী সিআইপি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জনাব রওশন আরা রবের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন এন্ড ফিন্যান্স) জনাব প্রবীর কুমার রায় পিপিএম (বার), এ উদ্যোগের সমন্বয়ক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও প্রবাস বিষয়ক কনসালটেন্ট জনাব এজাজ মাহমুদ, এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ আশরাফুর রহমান, প্রবাসী সিআইপি জনাব আবুল কাশেম (কুয়েত), জনাব আবদুল করিম (ওমান) ও জনাব কবির আহমেদ (ওমান) এবং কমিউনিটি সংগঠক জনাব নুর মোহাম্মদ (কাতার) ও জনাব সাজিন আহম্মেদ কৌশিক (পর্তুগাল)।
উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসী সিআইপি জনাব হাফেজ মোহাম্মদ ইদ্রিস (ওমান), জনাব শওকত আলী সোহাগ, (কাতার), জনাব দিদারুল ইসলাম (মোজাম্বিক), জনাব পারভেজ মোহা. আমানউল্লাহ চৌধুরী (ওমান), জনাব সাফফাত বিন আজাদ (অস্ট্রেলিয়া), জনাব মোহাম্মদ মোরশেদ (ওমান), জনাব এমরান হোসেন (কাতার) , জনাব হাফেজ মোহাম্মদ জামাল (সংযুক্ত আরব আমিরাত), জনাব মো. আবদুল মান্নান (ওমান) এবং বাংলাদেশি কমিউনিটি সংগঠক জনাব মো. নাসির মাহমুদ (ওমান)
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় সহায়তা ডেস্কের মাধ্যমে প্রবাসীরা তাদের পারিবারিক সমস্যা, নিরাপত্তাহীনতা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, বাড়ি নির্মাণকালে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সমস্যা ও হয়রানির বিষয়ে সব ধরনের পুলিশী সহায়তা পাবেন। প্রবাসে বসেই বাংলাদেশিরা সরাসরি ফোন কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, টেলিগ্রাম, মেসেঞ্জারসহ নানা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ডেস্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহায়তা পেতে পারেন।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি জনাব নুরেআলম মিনা, বিপিএম(বার), পিপিএম বলেন, যখনই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা আসে, তখন সবাই একবাক্যে স্বীকার করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা; তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের কথা। দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিউক্লিয়াস হিসেবে কাজ করে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। তাই রেমিটেন্সযোদ্ধা প্রবাসীরা জাতির অহংকার ও সম্পদ।
প্রবাসীদের অবমূল্যায়ন করার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে যুগান্তকারী অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তারপরও দেশে রেমিটেন্সযোদ্ধারা অবহেলার শিকার হবেন, প্রবাসে বসে পরিবারের নিরাপত্তাহীনতা বা দুষ্টচক্রের দ্বারা অর্জিত জমি-সম্পত্তি আত্মসাতের অপচেষ্টার খবরে উদ্বিগ্ন থাকবেন, দেশে এসে হয়রানির শিকার হবেন, আইনগত বিষয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরবেন-তা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। তাদের সহযোগিতা করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। সেই বোধ থেকেই সহায়তা ডেস্কের মাধ্যমে প্রবাসী পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগী হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।
অনুষ্ঠানে এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী বলেন, ‘মর্যাদাপ্রাপ্ত প্রবাসী সিআইপিদের নিবন্ধিত সংগঠন এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের পরিবারের কল্যাণে ভূমিকা রাখছে। একইভাবে প্রবাসী সিআইপিরা বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রা, সেক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখছে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রবাসীরা প্রত্যাশা করেন, দেশে সর্বপর্যায়ে তারা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ন্যায্য সহযোগিতা পাবেন এবং কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হবেন না।
বর্তমান সরকারের আমলে আমরা প্রবাসীদের স্বার্থে বেশকিছু পদক্ষেপ দেখেছি। আমাদের সংকটে পুলিশকেও এখন পাশে পাচ্ছি। বর্তমান ডিআইজি যখন পুলিশ সুপার ছিলেন, তখন তিনি বেশকিছু উদ্যোগ প্রবাসীদের পক্ষে নিয়েছিলেন এবং ডেস্ক স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। সেটা এখন দেশের অনেক স্থানে হয়ে গেছে। প্রবাসীবান্ধব নীতি দেশের অগ্রযাত্রায় সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করি।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী সিআইপি ও কমিউনিটি সংগঠকদের ’চট্টগ্রাম রেঞ্জের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারকে সম্মানিত করেন ডিআইজি নুরেআলম মিনা, বিপিএম(বার), পিপিএম।