জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ভুক্তভোগী দেশগুলোর জন্য প্রতিশ্রুত অর্থ সহায়তা নিশ্চিত করতে দাতা দেশগুলোকে আরো সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘে চলমান ৭৫তম সাধারণের অধিবেশনের ফাঁকে জলবায়ু বিষয়ক এক পার্শ্ব বৈঠকে এই কথা বলেন সরকার প্রধান। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সরাসরি যোগ না দেয়ায়, ভিডিও বার্তায় এই বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা।
উচ্চ পর্যায়ের এই গোলটেবিল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পানি ব্যবস্থাপনাসহ জলবায়ুর দীর্ঘমেয়াদি অভিযোজন সামাল দিতে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করা হয়েছে। বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আকস্মিকতা থেকে বাঁচতে দেশে ৪ হাজার ২৯১টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ৫২৩টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়টি তুলে শেখ হাসিনা। তিনি জানান, ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকেন যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায়।
বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-সিভিএফ এর চলতি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু অভিযোজন কেন্দ্রের শাখাও খোলা হয়েছে ঢাকায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দফা-১: আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরো বাড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অগ্রণী ভূমিকা প্রয়োজন।
দফা-২: বৈশ্বিক উষ্ণতা অবশ্যই ১ দশমিক ৫ ডিগ্রী মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
দফা-৩: ভুক্তভোগী দেশগুলোর প্রতিশ্রুত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
দফা-৪: দূষণে মূল দায়ী দেশগুলোর সংকট নিরসনে নিজস্ব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।
দফা-৫: জলবায়ু অভিবাসীদের পুনর্বাসন ইস্যুর কার্যকর সমাধান বৈশ্বিক দায়িত্ব।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এর আহ্বানে এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, কানডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতে, চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা একনিক, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মাহামাদু ইসোফৌ, ফিজির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া ভর্গ, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন, ভূটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। প্রত্যেকেই নিজ নিজ দেশের পক্ষে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখেন।