1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

প্রেমিক‌কে নি‌য়ে চাচাত বোন‌কে হত‌্যা,প্রেমি‌কের হা‌তেই মৃত‌্যু হল প্রেমিকার

রংপুর সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৫৩১ বার পঠিত

রংপুর নগরীর মধ্যগনেশপুর এলাকার বাসা থেকে স্কুলছাত্রী দুই বোনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যার তথ্য পায়। এ ঘটনায় শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে পুলিশ মাহফুজুর রহমান রিফাত নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজ দুই বোনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রাতে মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তম প্রসাদ পাঠক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রিফাতকে গ্রেফতারের তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার দুই বোনের লাশ উদ্ধার করার পর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় (নম্বর ১০০০ তারিখ ১৮/৯/২০)। অন্যদিকে শনিবার সকালে নিহত দুই বোনের একজন জান্নাতুল মাওয়ার বাবা মমিমনুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নম্বর-৩১ তারিখ ১৯/৯/২০) দায়ের করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, শনিবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে রংপুর নগরীর মধ্যবাবু খাঁ মহল্লা থেকে দুই বোন হত্যায় মাহফুজার রহমান ওরফে রিফাতকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাবার নাম এমদাদুল ইসলাম। পুলিশ জানায় আসামিকে সু-কৌশলে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

যে ভাবে দুই বোনকে হত্যা করা হয়
পুলিশের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নগরীর মধ্যগনেশপুর এলাকায় মমিনুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং মোকসেদুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আখতার মীম এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তারা দুই জন চাচাতো বোন। তারা একই বাসায় পাশাপাশি ঘরে থাকতো। জান্নাতুল মাওয়ার বাবা-মা তাদের স্বজনদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে গিয়েছিলো। তবে মীমের বাবা-মা বাসাতে থাকলেও তারাও বাইরে ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিহত সুমাইয়া আখতার মীমের প্রেমিক মাহফুজার রহমান রিফাত মীমকে ফোন করে তাদের বাসায় আসে। তারা দুই জনেই মীমদের থাকার ঘরে অবস্থান করে। এদিকে মীমের চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়া হঠাৎ করে মীমদের ঘরে ঢুকে মীম ও তার প্রেমিক রিফাতকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে বিষয়টি তার বাবা-মাকে বলে দেওয়ার হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মীম ও তার প্রেমিক রিফাত জান্নাতুল মাওয়ার ঘরে প্রবেশ করে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য মুখে বিষ ঢেলে দেয় এবং গলায় ব্লেড দিয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলে। এ ঘটনার পর রিফাতের সঙ্গে মীমের কথা কাটাকাটি হয়। রিফাত এসময় বুঝতে পারে মীমও হয়তো জান্নাতুল মাওয়াকে মেরে ফেলার ঘটনায় তার নাম বলে দিতে পারে। এ কারণে রিফাত মীমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। সঙ্গে সঙ্গে মীমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার লাশ ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানের মধ্যে ঝুলিয়ে দিয়ে রিফাত তাদের বাসা থেকে বের হয়ে যায়।

দুপুর দেড়টার দিকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচানো অবস্থায় মীমের লাশ দেখে এবং জান্নাতুল মাওয়াকে অন্যঘরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা ট্রিপল নাইনে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এরপর পুলিশ দুই বোনের লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় শুক্রবার নিহত মীম ও জান্নাতুল মাওয়ার বেশ কয়েকজন স্বজনসহ ১০-১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দুই বোনের সঙ্গে কারো প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা, বিভিন্ন বিষয় তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে মীমের মোবাইলফোনে পাওয়া রিফাতের নম্বরে বিভিন্ন সময়ে কথা বলা এবং হত্যাকাণ্ডের আগে তাদের বাসায় আসার আগেও কথা হওয়ার বিষয়টি তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে নগরীর মধ্য বাবু খাঁ মহল্লা থেকে রিফাতকে গ্রেফতার করা হয়। তবে রিফাতের সঙ্গে আরও কেউ ছিল কিনা আরও কোনও ঘটনা নেপথ্যে আছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

এ বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তম প্রসাদ জানান, আমরা রিফাতকে গ্রেফতার করেছি। তার কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। পুরো বিষয়টি রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com