নেত্রকোনার কলমাকান্দায় আব্দুল কাইয়ুম (১৩) নামে এক কিশোরের হাত, পা, গলা ও মুখে কসটেপ প্যাঁচিয়ে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে ফেলে অটোরিকশা ছিনতাই করে একটি চক্র।
পথচারী ক্ষেতের মধ্যে ঘেগরানোর শব্দ ও ধান গাছ নড়াচড়া দেখে কিশোরকে উদ্ধার করেন। পরে ওই কিশোর অটোরিকশা ছিনতাইয়ের কথা বলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
উদ্ধারকারীর ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী অটোরিকশাটি ধাওয়া করে আটকাতে পারলেও ছিনতাই চক্রের চারজনের মধ্যে দুজন পালিয়ে যেতে । এলাকাবাসী এ চক্রের আটক দুজনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ এবং কিশোরকে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল কদ্দুস বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ আরো ১/২ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে কলমাকান্দা থানায় মামলা দায়ের করেন ।
আটককৃতরা প্রথমে জেলার পূর্বধলা উপজেলার বৈরাটী ইউপির দরুন বৈরাটী গ্রামের মৃত মোতালেবের ছেলে রফিক ওরফে ফারুক (৩৭) ও একই গ্রামের মৃত নিজামুলের ছেলে এনামুল (২০) পরিচয় হাসপাতালে লিপিবদ্ধ করেন। পরবর্তীতে পুলিশি জেরার মুখে নিজেদেরকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সরিষা ইউনিয়নে মাছিমপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে ফারুক মিয়া ও একই উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের মৃত নিজামুল হকের ছেলে এনামুল হক (২০) পরিচয় দেন।
ভুক্তভোগী আব্দুল কাইয়ুম জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উড়াদীঘি গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। জ্ঞান ফিরে এলেও মঙ্গলবার (এ প্রতিবেদন লেখা) পর্যন্ত বাকরুদ্ধ অবস্থায় কলমাকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন ওই কিশোর।
এর আগে গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলমাকান্দার পোগলা ইউপির মানপুর বাজারের পেছনের ক্ষেত ও প্রাইমারী স্কুলের দক্ষিণ পাশের রাস্তায় অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল কদ্দুস জানান, গত সোমবার এশা নামাজ শেষে উড়াদীঘি বাজার থেকে কাইয়ুমকে অটোরিকশাটি বাড়িতে রেখে আসতে বলি। বাড়িতে যাওয়ার পথের মধ্যে চারজন যাত্রী পোগলা ইউপির আমবাড়ি বাজারে যাওয়া-আসার জন্য পাঁচশো টাকায় ভাড়া নির্ধারণ করে কাইয়ুমকে আমবাড়ি নিয়ে নিয়ে যায়। ফেরার পথে যাত্রীরাই কাইয়ুমের মুখ, হাত, পা ও গলায় কসটেপ প্যাঁচিয়ে ধান ক্ষেতে ফেলে অটোরিকশা ছিনতাই করে। পথচারী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় পোগলা নামক এলাকার ভাঙা ব্রিজের উপর থেকে দুজন ছিনতাইকরীকে আটক এবং অটোরিকশা ও আমার ছেলেকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ সাজু মিয়া জানান, খবর পেয়ে আমি ওই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং থানা পুলিশের বিট অফিসার উপ-পরিদর্শক (এস,আই) আলমগীর কবিরকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানানো হয়। পরে ওইদিন রাতেই উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে ছিনতাই চক্রের আটককৃত দুই সদস্য ও কিশোরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করে দেন পুলিশ।
কলমাকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এস,আই) মো. আলমগীর কবির এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় আটক দুজনকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ছিনতাই চক্রের অপর দুই সদস্যের পরিচয় সনাক্ত ও আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।