পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ও আবু ছিদ্দিক সোহেল ঢাকার আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি এখনও দেশেই অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। সংস্থাটি বলছে, ওই দুই জঙ্গিকে ছয় মাসের পরিকল্পনায় আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং পরিকল্পনার তথ্য জেলে থাকা জঙ্গিদের কাছে পৌঁছে দেয় ফাতেমা তাসনীম শিখা। তিনি আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গির একজন আবু সিদ্দিক সোহেলের স্ত্রী এবং জঙ্গি ছিনতাইকাণ্ডের ‘প্রধান সমন্বয়ক’।
শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে গতকাল শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে শিখা এবং তার আশ্রয়দাতা হুসনা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।
পলাতক দুই জঙ্গি এখনও দেশেই রয়েছে বলে জানান মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এছাড়া আমরা শিখাকে গ্রেফতারের আগে আমরা পরিকল্পনা ও পালিয়ে যাওয়ার বিস্তারিত তথ্য জানতে পারছিলাম না। তাকে গ্রেফতারের পর পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সবকিছু জানতে পেরেছি। এছাড়া জঙ্গিরা কোন দিক দিয়ে পালিয়েছে তাও জানতে পেরেছি।
আদালত থেকে জঙ্গিরা সদরঘাট হয়ে একটি শেল্টার হাউজে অবস্থান করে। সেখান থেকে অন্যত্র পালিয়ে যায়। আর আদালত চত্বর থেকে শিখাসহ অন্যরা বিকল্প রাস্তা দিয়ে এলাকা ছাড়ে বলে জানান মো. আসাদুজ্জামান।
সিটিটিসি জানিয়েছে, ফাতেমা তাসনীম শিখা ২০১৪ সালে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) থেকে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। একপর্যায়ে তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন সাইমনের মাধ্যমে তিনি আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হন এবং পরবর্তী সময়ে সায়মনের মাধ্যমে আবু সিদ্দীক সোহেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক (আসকারি) শাখার সদস্য ছিলেন।
অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সোহেলের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে সে আরও গভীরভাবে সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৭ সালে মুক্তমনা ব্লগার অভিজিৎ রায়, প্রকাশক দীপন ও ব্লগার নীলাদ্রি নিলয় হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আবু সিদ্দিক সোহেল গ্রেফতার হয়।’
২০২২ সালের ২০ নভেম্বর সিএমএম কোর্ট ভবনের সামনে থেকে মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত এবং আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায় জঙ্গিরা। এই ঘটনায় পলাতক জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেলের স্ত্রী ফাতেমা তাসনীম শিখা পলাতক আসামি এবং হামলাকারী সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে।