ফিলিস্তিনিরা অতি-ডানপন্থী ইসরাইলি আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত যারা আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসলামিক কাঠামো ভেঙে ইহুদি মন্দির নির্মাণ করতে চায়।
ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল আকসায় নামাজরত মুসল্লিদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে ইহুদীবাদী ইসরাইলি বাহিনী। বুধবার ভোরে সেখানে থাকা শত শত মুসল্লির ওপর আকস্মিক হামলা চালায় তারা। এ সময় মসজিদের ভেতর প্রবেশ করে মুসল্লিদের গ্রেফতার ও মসজিদের ভেতর টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। রমজানের রাতে ইবাদত করতে আসা বহু ফিলিস্তুনিকে আটক করা হয়েছে। এতে সেখানে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে বড় সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরাইলি পুলিশ দাবি করেছে যে, দাঙ্গার জবাব দিতে এই হামলা চালানো হয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দাবি, দক্ষিণের শহরগুলোতে সাইরেন বাজানোর পরে গাজা থেকে ইসরাইলের দিকে নয়টি রকেট ছোড়া হয়েছে।
এই ঘটনা ফিলিস্তিনসহ বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমে সহিংসতা গত বছর ধরে বেড়েছে। উদ্বেগ রয়েছে যে, এই মাসে উত্তেজনা বাড়তে পারে, কারণ মুসলিম পবিত্র রমজান মাস, ইহুদি ধর্মের পাসওভার এবং খ্রিস্টান ইস্টারের সাথে মিলে যায়।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসরাইলি পুলিশের হামলায় সাত ফিলিস্তিনি রাবার-টিপড বুলেট এবং মারধরে আহত হয়েছেন। এতে আরো বলা হয়, ইসরাইলি বাহিনী চিকিৎসকদের মসজিদে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে।
মসজিদের বাইরে থাকা এক বয়স্ক মহিলা কাঁদতে কাঁদতে রয়টার্সকে বলেন, আমি একটি চেয়ারে বসে (কোরআন) তেলাওয়াত করছিলাম। আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তারা স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, একটি আমার বুকে আঘাত করেছে।
আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংস ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনি দলগুলো মুসল্লিদের ওপর ইসরাইলের হামলার নিন্দা করেছে। এই ঘটনাকে তারা অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ বলেছেন, ‘আমরা পবিত্র স্থানগুলোতে লাল রেখা অতিক্রম করার বিরুদ্ধে দখলদারিত্বকে সতর্ক করছি, যা একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটাবে।’
জর্ডান এবং মিশর, উভয়ই ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাস করার জন্য সাম্প্রতিক মার্কিন-সমর্থিত প্রচেষ্টায় অংশ নিয়েছে। দুই দেশই এই ঘটনার নিন্দা করে পৃথক বিবৃতি জারি করেছে।
হামাস ইসরাইলের এই হামলাকে ‘অভূতপূর্ব অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করে এই নিন্দা করেছে। আল আকসা রক্ষার জন্য পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের ব্যাপকভাবে সেখানে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।