উহুদের যুদ্ধে ৭০ জন শহীদ হয়েছে! সকল শহীদের লাশ এনে এক জায়গায় রাখা হচ্ছে। নবীজি গুনে দেখেলেন ৬৮ টা লাশ। ২ টা নাই একজন তাঁর চাচা হামজা (রাঃ) আরেকজন হানজালা (রাঃ)। অস্থির হয়ে পড়েছেন নবীজি। সব সাহাবাদের পাঠালেন লাশ খোঁজার জন্য।
হঠাৎ বোরকা পরা এক মহিলা এসে দাঁড়ালেন নবীজির কাছে। নবীজি তাঁকে চিনলেন না। -মহিলা বললেন; ইয়া রাসুল্লাহ আজকে আপনি একটা বিয়ে পড়িয়েছিলেন মনে আছে?
নবীজি বললেন; হ্যাঁ আমি তো হানজালার বিয়ে পড়িয়েছি। যার বিয়ের খুশিতে আমি খুরমা খেজুর ছিটিয়ে ছিলাম। মহিলা বললেন; ইয়া রাসুল্লাহ! আমার হাতটা দেখেন। হাতের মেহেদী এখনও শুকায়নি। কাল বিকেলে বিয়ে হয়েছিল আর রাত ২ টা বাজে উহুদের যুদ্ধের জন্য বের হয়ে গেছে হাঞ্জেলা। বাসর রাতে উনার সাথে আমার ভালোভাবে পরিচয়ই হয়নি। যাওয়ার আগে শুধু বলে গেছেন “যদি বেঁচে থাকি তাহলে দেখা হবে দুনিয়ায়, আর যদি শহীদ হয়ে যাই তাহলে দেখা হবে জান্নাতে”। মহিলা বললেন ইয়া রাসুল্লাহ যাওয়ার আগে আমার কপালে একটা চুম্বন করে গেছেন। লজ্জায় বলতেও পারি নাই আপনার জন্য গোসল ফরজ। নবীজি কাঁদছিলেন। মহিলা বললেন ইয়া রাসুল্লাহ, শহীদদের তো আপনি গোসল দেন না ! আমার স্বামীকে আপনি একটু গোসল করিয়ে দেবেন?
নবীজি সম্মতি প্রকাশ করার পর একজন সাহাবি দৌড়ে এসে বলল ইয়া রাসুল্লাহ হানজালা কে পাওয়া গেছে। সবাই গেলেন। গিয়ে দেখলেন সাদা কাফনের ভিতর লাশের মাথায় পানি। নবীজি মাথা হাতিয়ে দিলেন। জিবরাঈল আসলেন! এসে বললেন; ইয়া রাসুল্লাহ হানজালার কোরবানিতে আল্লাহ্ পাক এতটাই খুশি হয়েছে যে আমার বাহিনীকে আদেশ করলেন তাকে নিয়ে আসতে। ইয়া রাসুল্লাহ আমরা ফেরেশতারা তাকে তৃতীয় আসমানে এনে জমজমের পানি দিয়ে গোসল করিয়েছি এবং তার শরীরে থেকে যে সুগন্ধ পাচ্ছেন, এটা আল্লাহ্ পাকের বিশেষ খুসবু মিশক আম্বর আতরের ঘ্রাণ । আমরাই উনাকে কাফনের কাপড়ে আচ্ছাদিত করেছি ।
সুবহানআল্লাহ !!! আল্লাহ্ তাঁর প্রিয় মানুষকে কি পরিমাণ ভালবাসেন, কি পরিমাণ সম্মানিত করেন তা আমাদের পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব নয়।
পরিশেষে বলতে চাই, “হে আল্লাহ্ _ আপনি সকল মুসলমান ভাইদের এই পথের পথিক হওয়ার তওফিক দান করুন, — আমিন আমিন আমিন।