রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তারের চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ সংঘবদ্ধ চোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ রিপন ওরফে আকাশ, মোঃ শফিক ও একজন কিশোর হওয়ায় নাম প্রকাশ করা হলো না।
আজ বুধবার (৩ আগস্ট ২০২২) সকালে তেজগাঁও থানা ভবনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান, পিপিএম-সেবা।
তিনি বলেন, গত ২১ জুলাই মাস্টার্সের থিসিসের কাজ শেষে বাসযোগে বাসায় ফিরছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার। সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের সামনে ট্রাফিক সিগন্যালে বাসটি থেমে যায়। এ সময় এক যুবক বাসের জানালা দিয়ে পারিশার হাতে থাকা পোকো এম সি কালো রঙের মোবাইল ফোনটি টান দিয়ে নিয়ে যায়। পারিশা এ সময় দ্রুত বাস থেকে নেমে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে একজন সন্দেহভাজনকে ধরে ফেলেন। পারিশার সাথে থাকা তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল থেকে আরেকজন সন্দেহভাজনকে আটক করে। পারিশা ও তার বন্ধুদের সেই সাহসি ভূমিকার বিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এ সংক্রান্তে তেজগাঁও থানায় প্রথমে একটি জিডি পরে মামলা রুজু হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং অপরাধীর বিষয়ে পারিশার মৌখিক বর্ণনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে এক কিশোরকে কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে অস্বীকার করলেও পুলিশের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে ঘটনার সাথে নিজের ও রিপন নামের আরেকজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মোঃ রিপন ওরফে আকাশ অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। চুরি করা মোবাইল ফোনটি চার হাজার টাকায় কারওয়ান বাজারের চোরাই মোবাইল ক্রেতা মোঃ শফিকের নিকট বিক্রি করেছে বলে জানায়। তার দেওয়া তথ্য মতে, কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে চোরাই মোবাইলসহ শফিককে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্তদের মামলার ফিরিস্তি টেনে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, মোঃ রিপন ওরফে আকাশের নামে বিভিন্ন থানায় ৬ টি, জড়িত কিশোরের বিরুদ্ধে ৪ টি এবং চোরাই মোবাইল ক্রেতা শফিকের নামে ২ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
আলোচিত এ ঘটনাটির তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে শেষ করে ১০ দিনের মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে, যোগ করেন তিনি।
ভিকটিম পারিশা ও তার বন্ধুরা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। তবে এ ধরনের অপরাধীদের কাছে ছোটখাটো অস্ত্র থাকে, যাতে ভিকটিম আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জীবনহানীর আশঙ্কা হতে পারে। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে অপরাধীদের উপর ঝাপিয়ে না পড়ে আইনের সহায়তা নেওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।