চার চাকার গাড়ি কেনার সামর্থ্য যাদের নাই মোটরসাইকেল তাদের জন্য শুধু একটি দ্বিচক্রযানই নয় বরং একটি প্রয়োজনীয়তা, বাস্তবতা ও একটি স্বপ্ন। মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে গেলে স্বপ্নটা শুধু ভেঙে যায় না, প্রয়োজনীয়তা এবং বাস্তবতা হয়ে পড়ে রুক্ষ ও কঠিন। প্রতিটি চুরির ক্ষেত্রেই ভিকটিমরা হয় উদাসীন আর চোরেরা হয় অতি চালাক। ১০টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ এ ধরনের এক মোটরসাইকেল চোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।গ্রেফতারকৃতদের নাম- মশিউর রহমান ওরফে মিশু, রনি দালাল ও নাজিম শেখ।
গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ খলিলুর রহমান ডিএমপি নিউজকে বলেন, রাজধানীর শাহবাগ ও বংশাল এলাকায় গাড়ি চোর চক্রের কতিপয় সদস্য চোরাই মোটরসাইকেল ক্রয়-বিক্রয়ের জন্যে অবস্থান করছে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২) রাত ১১:০০টায় রাজধানীর শাহবাগ ও বংশাল এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জের মোল্লার চর, সিপাহী পাড়া, বেতকা, মুক্তারপুরসহ বিভিন্ন স্থান হতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১০টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা একটি মোটরসাইকেল চুরি করতে তাদের দুইজন সদস্য স্পটে থাকেন। একজনের কাজ হচ্ছে মোটরসাইকেল মালিকের গতিবিধি লক্ষ্য করা এবং অপরজনের কাজ হচ্ছে মোটরসাইকেলটি কিছু সময় পর্যবেক্ষণ করা। অতঃপর সুযোগ বুঝে মাত্র ৪-৫ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে তাদের সাথে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে মোটরসাইকেলের ঘাড় লক ভেঙ্গে মোটরসাইকেল চালু করে সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থান ত্যাগ করে। এরপর তারা চোরাই মোটরসাইকেলগুলো কিছুদিন তাদের হেফাজতে রেখে গ্রামের মানুষের কাছে ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা দামে বিক্রয় করে।
গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, টিএসসি চত্বর, নগর ভবন, গুলিস্থান, ধানমন্ডি লেক, কাচঁপুর, গাউছিয়া, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান হতে প্রতি সপ্তাহে ২/৩ টি করে মোটরসাইকেল চুরি করে। এ সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ৪টি, বংশাল থানায় ১টি, নারায়নগঞ্জ সদর থানায় ১টি, আড়াইহাজার থানায় ১টি ও ঢাকা জেলার দোহার থানায় ১টি মামলা রয়েছে মর্মে জানান গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা।
গ্রেফতারকৃত মশিউর ও রনিকে শাহবাগ থানা ও নাজিমকে বংশাল থানার রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।